মঙ্গলবার

২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে নারীর মোবাইল ফোন-ব্যাগ ছিনতাই, তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার রাসিককে সুদৃঢ় আর্থিক ভিত্তির উপর দাঁড় করতে চাই : মেয়র কাতারের আমির আসছেন আজ, সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার দখলের সুযোগ বালিশকাণ্ডের সেই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে রাবির হল, অনিয়মের অভিযোগে দুদকের হানা/৩

নিহত বেড়ে ১১০ কাবুলে ভয়াবহ হামলাকারী কারা এ আইএস-কে?

Paris
Update : শনিবার, ২৮ আগস্ট, ২০২১
জানা গেলো কাবুলে হামলাকারীদের পরিচয়, আরটিভি

এফএনএস : আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) খোরাসান প্রদেশ শাখার ভয়াবহ বোমা হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১০ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন দেড় শতাধিক। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তালেবাননিয়ন্ত্রিত জনস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলেছে, নিহতদের মধ্যে ১৩ মার্কিন সৈন্য রয়েছেন, আছেন তালেবানেরও ২৮ সদস্য। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কাবুল বিমানবন্দরের আবে ফটকে জোড়া বিস্ফোরণ ঘটে। আইএস এ হামলার দায় স্বীকার করে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সেনা ও তাদের আফগান মিত্রদের ‘লক্ষ্যবস্তু’ বানিয়ে তারা আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে আফগান সংবাদমাধ্যম তোলো নিউজ জানিয়েছে, বিস্ফোরণ ঘটেছে বিমানবন্দর লাগোয়া ব্যারন ক্যাম্পের ভেতরের জটলা থেকে। যারা আফগানিস্তান ছাড়তে চাইছেন, তারাই ব্যারন ক্যাম্পে জড়ো হয়েছিলেন।

ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর হোয়াইট হাউজে ব্রিফিংকালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হামলাকারীদের খুঁজে বের করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসীদের কাছে হার মানবে না। আমরা তোমাদের ক্ষমা করবো না। আমরা (এ ঘটনা) ভুলে যাবো না। আমরা তোমাদের খুঁজে বের করবোই এবং তোমাদের এর মূল্য দিতে হবে। তালেবানের আগ্রাসনের মুখে গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানে পশ্চিমাসমর্থিত সরকারের পতন ঘটে। তারপর থেকেই কাবুল চালাচ্ছে তালেবান। যদিও তারা সবার জন্য ‘সাধারণ ক্ষমা’ ঘোষণা করেছে, তবে তালেবান ক্ষমতাগ্রহণের পর থেকে আফগানিস্তান ত্যাগের হিড়িক পড়ে গেছে। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশ কাবুলে বিশেষ প্লেন পাঠিয়ে তাদের নাগরিকদের ফেরত নিয়েছে। কেবল যুক্তরাষ্ট্রই ১৪ আগস্ট থেকে এখন পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষকে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিয়েছে। কাবুল বিমানবন্দরে এই কার্যক্রমই চলছে এখনো।

এদিকে ইসলামিক স্টেট খোরাসান (আইএস-কে) আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের হামিদ কারজাই বিমানবন্দরে ভয়াবহ বোমা হামলার দায় স্বীকার করেছে। এ হামলায় এখন পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা ১১০ জন। আহত আরও দেড় শতাধিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতদের মধ্যে অনেকেরই অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম সূত্রে। কিন্তু কারা আসলে এ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএস-কে? তাদের হামলার উদ্দেশ্য বা কি ছিল? বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, আফগানিস্তানের কাবুলে হামলা চালানো আইএস-কে সংগঠনটির পূর্ণ নাম ইসলামিক স্টেট অব খোরাসান। জঙ্গী গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) এর আঞ্চলিক সহযোগী শাখা হিসেবে কাজ করছে তারা। বর্তমান আফগানিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ে প্রাচীন আমলে যে অঞ্চল সেটিই খোরাসান নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে আইএস-কে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানে সক্রিয় রয়েছে বলে জানা গেছে। কয়েক বছর ধরে সহিংস ঘটনার পেছনে এই গোষ্ঠীটি দায়ী বলে অভিযোগ পাওয়া যায় এর আগে।

বিশেষ করে তারা স্কুলছাত্রীদের ওপর হামলা এমনকি হাসপাতালে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছিল। এখন তারা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আইএসের নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটাও ধারণা করা হয় যে, আইএস-কে’র তালেবানের তৃতীয় পক্ষ হাক্কানি নেটওয়ার্কের সঙ্গে সম্পৃক্ততা রয়েছে। তবে তালেবানের সঙ্গে তাদের বড় পার্থক্যও বিদ্যমান। তারা অভিযোগ করে গোপন চুক্তির অংশ হিসেবে আমেরিকানরা আফগানিস্তানকে তালেবানের হাতে তুলে দিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আইএস এখন আফগানিস্তানের নিরাপত্তার জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে যেটি আগামী তালেবান সরকারের জন্যও অশনিসংকেত। ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখলে নেওয়ার পর আফগানিস্তানের পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়। দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ গানি পালিয়ে যাওয়ার কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে। তালেবান সরকার গঠনের কাজ শুরু করলেও আঞ্চলিক কয়েকটি সংগঠন তালেবানের বিরোধীতা শুরু করে। তালেবানের পূর্বের শাসনকাল নিয়ে জনমনে এক ধরনের অস্বস্তি তো আছেই। এর মাঝেই বিমানবন্দরে হামলা চালিয়ে তাদের উপস্থিতি জানান দিলো আইএস-কে।

হোয়াইট হাউজ : কাবুল বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণে ১৩ মার্কিন সেনাসহ অন্তত ৯০ জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও প্রায় ১৫০ জন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে এই জোড়া হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে হামলার পর পর তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র জানায়, এই হামলার সঙ্গে তালেবানরা জড়িত নয়। কাবুল বিমানবন্দরে জোড়া বিস্ফোরণের পর এক সংবাদ সম্মেলনে বিভিন্ন প্রশ্নে জবাব দেন হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব জেন সাকি। তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, এই হামলার সঙ্গে তালেবান জড়িত কিনা? এর জবাবে তিনি বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। এখন পর্যন্ত আমরা যা জানি, তাতে তালেবান এই হামলার সঙ্গে জড়িত নয়। সাকি বলেন, আমি মনে করি জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়েছেন এবং তিনি এ বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। এই মুহূর্তে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।

তালেবান এই হামলার ব্যাপারে জানতো বা এর সঙ্গে জড়িত ছিল না বলেই মনে করি। আর গত কয়েক ঘণ্টায় আমাদের সেই অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। হোয়াইট হাউজের প্রেস সচিব আরও বলেন, স্পষ্টতই, আজ যা ঘটেছে এবং আফগানিস্তানে মার্কিন সেনা সদস্যদের প্রাণহানি একটি ট্র্যাজেডি। এটা ভীতিকর। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের শাসনামলে আমার অভিজ্ঞতা হওয়া সবচেয়ে খারাপ বিষয়গুলোর মধ্যে একটি এটি। কিন্তু, এই মুহূর্তে আমাদের অতিরিক্ত কোনও মূল্যায়ন নেই। এদিকে আরেক প্রশ্নের জবাবে সাকি বলেন, এই হামলার পর উদ্ধার অভিযান চালিয়ে নেয়ার জন্য তালেবানদের সঙ্গে ‘সমন্বয় করতে’ হবে মার্কিন বাহিনীকে। তিনি বলেন, দেখুন, তালেবানের ব্যাপারে আমরা কি ভাবছি সেটা নিয়ে অতিরঞ্জিত করতে চাই না। আমরা তাদের বিশ্বাস করি না। তারা আমাদের বন্ধু নয়। আমরা কখনও এটা বলিনি।

কিন্তু এটাও সত্য যে আফগানিস্তানের বিশাল অঞ্চল এখন তালেবানদের নিয়ন্ত্রণে। আর তালেবানদের সঙ্গে সমন্বয়ের কারণেই আজ পর্যন্ত আমরা ১ লাখ ৪ হাজারের বেশি মানুষ উদ্ধার করতে পেরেছি। ১ লাখ ৪ হাজার মানুষের জীবন বাঁচাতে পেরেছি। আর উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য এই সমন্বয় করাটা জরুরি। হোয়াইট হাউজের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এখন, আমি আপনার প্রশ্ন বুঝতে পারছি। তালেবানরা কি জানতো বা তাদের ভূমিকা কি ছিল, তা নিয়ে জানতে চাইছেন আপনি। এই হামলায় তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে এই মুহূর্তে আমাদের কোনও মূল্যায়ন নেই। অবশ্যই, এটা এই মুহূর্তের জন্য। যদি সেটা পরিবর্তন হয়, তাহলে আমরা আপনাদের তা জানাবো।

তালেবান : কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে জোড়া বিস্ফোরণে তালেবানের কোনও সদস্য হতাহত হয়নি বলে জানিয়েছে গ্রুপটি। বিবিসি পশতু সার্ভিসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই দাবি করেছেন তালেবানের প্রধান মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ। তিনি বলেন, তালেবানের কেউ হতাহত হয়নি। খবর বিবিসির। মুজাহিদ বলেন, আমাদের (তালেবান) কেউ হতাহত হয়নি। যে স্থানে এই ঘটনা ঘটেছে সেই জায়গার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে মার্কিন বাহিনী। অথচ রয়টার্সের এক রিপোর্টে তালেবানের এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, ওই জোড়া হামলায় তাদের ২৮ জন নিহত হয়েছে। কাবুল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে বৃহস্পতিবারের ওই জোড়া বিস্ফোরণে অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জন মার্কিন সেনাও রয়েছে। বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে ওই হামলার ঘটনায় আরও অন্তত ১৫০ জন আহত হয়। পরে এই হামলার দায় স্বীকার করে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

এক বিবৃতিতে তারা জানায়, তাদের একজন আত্মঘাতী বোমা হামলাকারী যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সঙ্গে থাকা অনুবাদক এবং সহযোগীদের লক্ষ্য করে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। এদিকে কাবুলে ইসলামিক স্টেট আরও হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মার্কিন কমান্ডাররা। মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি বলেছেন, তারা রকেট বা বোমাবোঝাই গাড়ি দিয়ে কাবুল বিমানবন্দরে হামলা চালাতে পারে। জেনারেল ম্যাকেঞ্জি বলেন, আমরা আমাদের সাধ্য অনুযায়ী সব কিছু করছি। তবে হামলার পর উদ্ধার অভিযানের গতি আরও বাড়িয়েছে মার্কিন বাহিনী। আগামী ৩১ আগস্টের মধ্যেই উদ্ধার অভিযান শেষ করতে চায় তারা। কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেনা প্রত্যাহারের সময়সীমা বাড়াননি।

বৃহস্পতিবারও সেই কথা জানিয়েছেন তিনি। বাইডেন বলেন, হামলার পরও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত থাকবে। এ সময় তিনি হামলাকারী খুঁজে বের করে জবাব দেয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এমনকি ইসলামিক স্টেটের (আইএস) আঞ্চলিক শাখা আইসিস-কে, যারা এই হামলা চালিয়েছে, তাদের ওপর হামলার পরিকল্পনা করতে পেন্টাগনকে নির্দেশ দিয়েছেন বাইডেন। কাবুল বিমানবন্দরের বাইরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহতদের মধ্যে তালেবানের অন্তত ২৮ জন রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওই বাহিনীর একজন মুখপাত্র। শুক্রবার রয়টার্সকে তিনি বলেছেন, “আমেরিকানদের চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে আমাদের।” তিনি বলেন, পূর্ব নির্ধারিত ৩১ অগাস্ট তারিখের মধ্যেই আফগানিস্তান থেকে সব বিদেশি বাহিনীকে সরিয়ে নিতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত বদলানোর কোনো ‘কারণ ঘটেনি’।

তালেবান কাবুলের দখল নেওয়ার পর থেকেই পশ্চিমা দেশগুলো তাদের সৈন্যদের পাশাপাশি নিজেদের বেসামরিক নাগরিকদের কাবুল বিমানবন্দর দিয়ে আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নিচ্ছে। হাজার হাজার আফগানও দেশ ছাড়ার চেষ্টায় মরিয়া হয়ে বিমানবন্দরের ভেতরে ও বাইরে অপেক্ষা করছেন প্রতিদিন। ফলে সেখানে এক নজিরবিহীন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যেই বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিমানবন্দরের বাইরে পরপর দুটি বড় বিস্ফোরণ ঘটানো হয়, যার দায় স্বীকার করেছে আইএস। আফগানিস্তানের একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বরাত দিয়ে শুক্রবার সকালে বিবিসি জানিয়েছে, ওই হামলায় অন্তত ৯০ জনের মৃত্যু হয়েছে, আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫০ জন।

নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৩ জন মার্কিন সেনা রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে পেন্টাগন। তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সৈন্যরা বিমানবন্দরের ভেতরের অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে। আর তালেবান যোদ্ধারা বিমানবন্দরের বাইরের এলাকা নিয়ন্ত্রণ করছে। বৃহস্পতিবারও তারা বলেছিল, কাবুলের হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের বাইরে অপেক্ষারত হাজার হাজার মানুষকে নিরাপত্তা দিতে তারা প্রস্তুত।

ধীরে নীতিতে ভারত : আফগানিস্তান ইস্যুতে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের ডাকা সর্বদলীয় বৈঠকে বিরোধী দলের নেতাকর্মীরাও অংশ নিয়েছেন। আফগানিস্তান থেকে ভারতীয়দের উদ্ধারে সরকারের পদক্ষেপ সম্পর্কে কেন্দ্রের কাছে জানতে চেয়েছে বিরোধীরা। ভারতীয়দের কাবুল থেকে কীভাবে সরিয়ে নেওয়া হবে তা ব্যাখ্যা করেছে কেন্দ্র। আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতা নিয়ে কী ভাবছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার? পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চেয়েছে বিরোধীপক্ষ। এর জবাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবান ইস্যুতে অন্যান্য দেশের মতো ধীরে চলার নীতিই অনুসরণ করছে ভারত। ৩১টি রাজনৈতিক দলের ৩৭ জন প্রতিনিধিকে নিয়ে সাড়ে তিন ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে।

ওই বৈঠকের পর পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, আমরা রাজনৈতিক দল ও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনাদের যে বার্তা দিতে চাই তা হলো, আমাদের সবারই মতামত এক। আফগানিস্তানের বিষয়ে আমাদের শক্তিশালী জাতীয় অবস্থান রয়েছে। আফগানিস্তানের মানুষের সঙ্গে আমাদের বন্ধুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতেই আমরা এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আফগানিস্তানে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করাই আমাদের লক্ষ্য। মানুষজনকে উদ্ধার করার জন্য সরকার সব ধরনের চেষ্টা করছে। কাবুল থেকে লোকজনকে উদ্ধার করার জন্য ৬টি বিমান পাঠিয়েছে সরকার।

আফগানিস্তান থেকে বেশিরভাগ ভারতীয়কেই দেশে ফেরানো হয়েছে। তবে গতকাল কিছু মানুষ বিমানে উঠতে পারেননি। সে কারণে তাদের এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। আমরা অবশ্যই আফগানিস্তান থেকে সব ভারতীয়কে উদ্ধার করে আনার চেষ্টা করব। আমরা আফগানিস্তানের কিছু নাগরিককেও উদ্ধার করে নিয়ে এসেছি। এদিকে ফ্রান্স জানিয়েছে, আগামী শুক্রবারের মধ্যেই কাবুল থেকে লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে। কাবুলে অবস্থানরত ফরাসি নাগরিক এবং দেশ ছাড়তে ইচ্ছুক আফগান নাগরিকদের শুক্রবার সন্ধ্যার মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী জিন ক্যাসটেক্স।

বৃহস্পতিবার আরটিএল রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী ক্যাসটেক্স জানান, এই সময়ের পর কাবুল বিমানবন্দর থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। ফরাসি সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা অনুযায়ী এই তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে কাবুল বিমানবন্দরের দায়িত্বে রয়েছে মার্কিন সৈন্যরা। ৩১ আগস্টের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এবং এর মিত্র দেশগুলোর লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris