শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জঙ্গি সংগঠনগুলোর কৌশলে সক্রিয় থাকার চেষ্টা

Paris
Update : বুধবার, ২৫ আগস্ট, ২০২১

এফএনএস : নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলো বিভিন্ন কৌশল ব্যবহার করে সক্রিয় থাকার চেষ্টা চালাচ্ছে। তারা তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম গতিশীল করতে নানা কৌশল অবলম্বন করছে। বিশেষ করে অনলাইনে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সংঘবদ্ধ হতে চাচ্ছে তারা। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে নতুন কর্মী সংগ্রহ, মোটিভেশন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতে অনলাইনের মাধ্যমগুলো ব্যবহার করা হচ্ছে। এমনকি নিষিদ্ধ ঘোষিত একাধিক জঙ্গি সংগঠনের নেতাকর্মীরা সংগঠনকে বিস্তৃত করতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোও পরিদর্শন করেছে। পাশাপাশি কমপক্ষে শতাধিক তরুণ বোমার সরঞ্জাম কিনে বান্দরবানের থানচি পাহাড়ে জঙ্গি ট্রেনিং করেছে । আর তাদের মধ্যে থেকে ২০ থেকে ২৫ জন হিজরতের নামে আফগানিস্তান গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, বর্তমানে দেশে বড় কোন হামলা বা নাশকতা ঘটানোর মতো সাংগঠনিক সক্ষমতা নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনগুলোর না থাকলেও তারা সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করছে। জঙ্গি সদস্যরা নব্য জেএমবিকে পুনর্গঠন করতে ও সাংগঠনিক ক্ষমতা, অর্থের যোগানে আনলাইনে এক্টিভ রয়েছে। তবে তাদের কার্যক্রম প্রতিহত করতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও মনিটরিং অব্যাহত রেখেছে। উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা অনলাইনে প্রায় শতাধিক আইডির মাধ্যমে তরুণদের জঙ্গীবাদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করছে। মূলত যারা জঙ্গি রিক্রুটমেন্টের সঙ্গে জড়িত তারাই ওসব আইডি খুলে জঙ্গিবাদের আদর্শ ছড়িয়ে দিচ্ছে। সিটিটিসি ওরকম বেশ কয়েকটি ফেসবুক আইডির সন্ধান পেয়েছে।

সেজন্য হোয়াইট হাউসের মুফতি নামক একটি উগ্রবাদী ফেসবুক আইডিসহ কয়েকটি আইডির মালিককে খোঁজা হচ্ছে। আফগানিস্তানে তালেবানের পুনরুত্থানে দেশীয় জঙ্গি সংগঠনগুলোও সক্রিয় হয়ে ওঠার চেষ্টা করছে। ইতিমধ্যে অনলাইনে তাদের কার্যক্রম বৃদ্ধি পেয়েছে। সূত্র জানায়, সম্প্রতি রাজধানীতে পুলিশের কাউন্টার টেররিজম এ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) হাতে নব্য জেএমবির সামরিক শাখার প্রধানসহ ৪জন গ্রেফতার হয়। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তার আগেও প্রায় ২০ জন নব্য জেএমবি সদস্যকে গ্রেফতার করে।

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত নব্য জেএমবি সদস্যরা জানায়, তাদের অনেক বন্ধু হিজরতের নামে আফগানিস্তান গেছে। তারা ভারত ও পাকিস্তান হয়ে আফগানিস্তান পৌঁছায়। যদিও জঙ্গিদের প্রতিরোধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অনলাইনে প্রতিনিয়ত মনিটরিং চালাচ্ছে। ফলে জঙ্গি সংগঠনগুলোর অনেক সদস্যই ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়েছে। তারপরেও কিছু জঙ্গি সদস্য হিজরত করতে দেশ ছেড়েছে। তাছাড়া জঙ্গি সংগঠনের সদস্যরা অনলাইন ব্যবহার করে নাশকতার উদ্দেশে বোমা তৈরির প্রশিক্ষণ নিচ্ছে। হামলা বা নাশকতার সক্ষমতা না থাকলেও সংগঠনকে পুনর্গঠন করতে অনলাইনে সক্রিয় রয়েছে নব্য জেএমবির সদস্যরা।

সূত্র আরো জানায়, ইতিপূর্বে রাজধানীর গুলিস্তান, মালিবাগ ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ সাইনবোর্ড এলাকায় ট্রাফিক পুলিশ বক্সসহ কয়েকটি বোমা হামলা ও নাশকতার ঘটনা ঘটিয়েছে নব্য জেএমবির সদস্যরা। সংগঠনের কয়েকজন প্রশিক্ষকের মাধ্যমে অনলাইনে বোমা তৈরির কৌশল জেনে তারা হামলার জন্য বোমা তৈরি করেছিল। অবশ্য পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ওসব হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকা জঙ্গি সদস্যদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। মূলত ওসব হামলা চালিয়ে নব্য জেএমবি তাদের অস্তিত্ব জানান দিয়ে চেয়েছিল। এভাবেই প্রতিনিয়ত তারা নিজেদের অস্তিত্ব জানান দিতে কার্যক্রম চালিয়ে আসছে।

তবে বড় হামলার সক্ষমতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা বর্তমানে নব্য জেএমবিসহ অন্যসব জঙ্গী সংগঠনগুলোর নেই। এদিকে এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মোঃ শফিকুল ইসলাম জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, জঙ্গিদের ব্যাপারে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর কঠোর নজরদারি রয়েছে। সম্প্রতি ক্ষমতা দখল করা আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠী তালেবানের আহ্বানে যারা হিজরত করতে দেশ ছেড়েছে তাদের বিষয়ে গোয়েন্দারা সতর্ক রয়েছে। তারা বাংলাদেশে ঢোকার চেষ্টা করলেই গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হবে। এসব নিয়ে দেশে যারা কাজ করে তারা সতর্ক রয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris