সুমন আলী, নওগাঁ : নওগাঁ পৌরসভার আওতাধীন স্যানেটারী ল্যান্ডফিল ও ৬টি গণশৌচাগার নির্মান কাজে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ, যথাযতভাবে পৌরসভা সাইট বুঝে না দেয়ায় তারা কাজ করতে পারছে না। এ কারণে তারা কাজ শুরু করতে না পারায় ওই প্রকল্পের চুক্তি বাতিলের জন্য পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছে। তবে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে সাইট বুঝে না দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে যথাযথভাবে স্যানেটারী ল্যান্ডফিল উন্নয়ন ও ৬টি পাবলিক টয়লেট নির্মান কাজে স্থান বুঝে দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁ পৌরসভা ও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, তৃতীয় নগর পরিচালনা অবকাঠামো উন্নীতকরন প্রকল্পের আওতায় ৩য় পর্যায়ে নওগাঁ পৌরসভায় একটি স্যানেটারী ল্যান্ডফিল ও পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৬টি গণশৌচাগার নির্মানের জন্য ৩০ নভেম্বর দরপত্রের আহ্বান করা হয়। দরপত্র যাচাই-বাছাই শেষে চলতি মাসের ১২ এপ্রিল কাজটি পায় মেসার্স খান বিল্ডার্স ইথেন এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ১৩ এপ্রিল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কার্যাদেশ পায়। প্রকল্পটির বাস্তবায়নের ব্যায় ধরা হয়েছে ১১ কোটি ৭৫ লাখ ৯২ হাজার ২৪৭ টাকা। ওই প্রকল্পের আওতায় স্যানেটারী ল্যান্ডফিল ছাড়াও শহরের ডিগ্রী কলেজের মোড়, বাজারের কিচেন মার্কেট, মুক্তির মোড়, সুপারীপট্টি, তুলশীগঙ্গা ও দয়ালের মোড়ে ৬টি গনশৌচাগার স্থাপনের কথা।
যার মেয়াদ শেষ হবে ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের আভিযোগ, পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সাইট বুঝে না দেয়ায় তারা কাজ শুরু করতে পারছে না। শহরের কোমাইগাড়ি মৌজায় স্যানেটারী ল্যান্ডফিলের স্থান নির্ধারণ করে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। স্থানটিতে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা আবর্জনা ফেলে আসছে পৌর কর্তৃপক্ষ। পৌর কর্তৃপক্ষ চুক্তি অনুযায়ী স্থানটিতে থেকে ময়লা আবর্জনা সরিয়ে নিয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বুঝে দেওয়ার কথা স্থানটি। কিন্তু এখনো ময়লা-আবর্জনা সরানো হয় নাই। প্রতিদিন ফেলা হচ্ছে ১০-১২ টন ময়লা আবর্জনা। এ বিষয়ে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান চিঠি চালাচালি করেও কর্তৃপক্ষের কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেয়ায় চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান।
এ বিষয়ে গত ২৭ জুলাই পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দিয়েছে। মেসার্স খান বিল্ডার্স এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেডের মালিক ইকবাল সারিয়া রাসেল জানান, চলতি বছরের ১৩ এপ্রিল কার্যাদেশ পাওয়ার ১৫ দিন অপেক্ষার পরও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সাইট বুঝিয়ে দেয়নি। এ কারণে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলীকে ২৭ এপ্রিল দেওয়া হয় ময়লা আবর্জনা সরিয়ে কাজের পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে। এরপর আরও ৩টি চিঠি দেয়া হয় কিন্তু তাতেও পৌর কর্তৃপক্ষ কোন উদ্যোগ নেয়নি। তাই চুক্তি থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তবে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জায়গাটি বুঝিয়ে দিলে আমরা কাজ করবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে নওগাঁ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে যথাযথভাবে স্যানিটারী ল্যান্ডফিলের স্থান ও ৬টি গনশৌচাগারের স্থান নির্ধারন করে দিয়েছি। একটি গনশৌচাগারের জায়গা নিয়ে কিছু সমস্যা থাকায় জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। সেটিরও ব্যবস্থা হয়ে যাবে। আমাদের কোন বিষয়ে গাফিলতি নেই। সিডিউল অনুযায়ী স্যানিটারী ল্যান্ডফিলের স্থানে আগের থেকে যে ময়লা-আবর্জনা রয়েছে তা ঠিকাদারকেই সরিয়ে নিতে হবে। সম্প্রতি যে ময়লা-আবর্জনা পৌরসভা ফেলেছে তা মেয়র অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।