শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সিনেমা হলগুলোর ভবিষ্যৎ কী?

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ২৯ জুলাই, ২০২১

এফএনএস : প্রতি বছর দুই ঈদকে ঘিরেই মুক্তি পায় দেশের সবচেয়ে বড় বাজেটের সিনেমাগুলো। এ সময়টাতে ব্যবসা ভালো হয় বলে প্রযোজকরা এ উৎসবকে ঘিরেই ছবি মুক্তি দিতে বেশি আগ্রহী থাকেন। অনেক বছর ধরে চলে আসা এ রীতিতে বাঁধ সাধলো মহামারী করোনা। গেল দুই বছর ধরে এ মহামারীর কারণে বিনোদন অঙ্গন পুরাই স্তব্ধ। সিনেমা হল বন্ধ, যার কারণে পাইপলাইনে অনেক সিনেমা মুক্তির মিছিলে থাকলেও তা নিয়ে রয়েছে অনিশ্চয়তা। গত চার ঈদে সিনেমা উৎসবের বারোটা বাজিয়েছে এ মহামারী।

২০২০ সালের দুই ঈদে মুক্তি পায়নি কোনো নতুন সিনেমা। সেই ধারাবাহিকতায় এ বছরের দুই ঈদও ছিলো সিনেমাহীন। মুক্তি পায়নি নতুন কোনো সিনেমা। তবে গত রোজার ঈদে ‘সৌভাগ্য’ নামে একটি সিনেমা বেশ কিছু হলে মুক্তি পেয়েছে বলে জানা যায়। এরপর এই কোরবানির ঈদের আগে স্টার সিনেপ্লেক্সে মুক্তি পেয়েছে ‘কসাই’ সিনেমাটি। এর বাইরে আর কোনো সিনেমা মুক্তি পেতে দেখা যায়নি।

অথচ সিনেমা মুক্তির তালিকা বেশ লম্বা, সে তালিকায় রয়েছে, অপারেশন সুন্দরবন, মিশন এক্সট্রিম, শান, বিক্ষোভ, বিউটি সার্কাস, জ¦ীন, অন্তরাত্মা, আগামীকাল, অ্যাডভেঞ্চার অব সুন্দরবন ইত্যাদি। এমতাবস্থায় বড় বাজেটের এ ছবিগুলো ঈদ উৎসবে মুক্তি দিতে না পারায় অনেকটা হতাশায় ভুগছেন প্রযোজকরা। তাদের ভাষ্যমতে, এ ছবিগুলো বিগ বাজেটের যার কারণে ঈদ ছাড়া মুক্তি দিয়ে এর লগ্নি উঠানো সম্ভব নয়। চার ঈদ পেরিয়ে গেলেও ছবিগুলো সিনেমা হলের মুখ দেখেনি।

যার কারণে ভেঙ্গে পরেছেন প্রযোজকরা। কবে হল খুলবে, আর খুললেও ঈদের বাইরে এসব ছবি মুক্তি দেওয়া হবে কী না তা নিয়েও রয়েছে সংশয়। এ বিষয়ে প্রদর্শক সমিতির জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, ‘এখন সিনেমা হলগুলো হল মালিকদের কাছে যন্ত্রণা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটা এখন যন্ত্রণা ছাড়া আর কিছুই না। এটা আমার ব্যক্তিগত মতামত। সিনেমা মুক্তি পাচ্ছেনা, হল গুলো চালানো যাচ্ছে না, কর্মচারীদের বেতন দেওয়া যাচ্ছে না। এভাবে তো চলতে পারেনা।

সিনেমা হল কবে খুলবে, এ বিষয়ে কিছুই বলা যাচ্ছেনা। আর খুললেও লাভ নেই, কারণ কেউ সিনেমা মুক্তি দিতেও চাচ্ছে না। এসময়ে ছবি মুক্তি দিলেও দর্শক দেখতে আসবে না, আসলেও যা আসবে তা দিয়ে কিছুই হবেনা। এ ছাড়া ছবি মুক্তি দিলে কোনো সময় কে ছবি বন্ধ করে দেয়, সেটাও বলা যাচ্ছেনা। এমতাবস্থায় প্রযোজক, হল মালিকরা সবাই অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।’ এমন প্রসঙ্গে প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরু বলেন, ‘গত বছরে প্রায় ৮ মাস সিনেমা বন্ধ ছিলো এরপর হল খোলার পর বিভিন্ন সময়ে ১৩-১৪ টা সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। এরপর করেনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারও হল বন্ধ হলো।

এরমধ্যে যে ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে সেগুলো তেমন আশার আলো দেখতে পারেনি। যেহেতু ঈদকে ঘিরে বিগ বাজেটের অনেক সিনেমা নির্মিত হয়, প্রযোজকরা ঈদে সিনেমা মুক্তি দিতে চান কারণ এসময়টাতে ব্যবসা ভালো হয়। গত দুই বছরে ঈদে মুক্তির জন্য অনেক সিনেমা প্রস্তুত রয়েছে কিন্তু সেগুলো মুক্তি দেওয়া সম্ভব হচ্ছেনা। এতে প্রযোজকরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

যে ক্ষতি আসলেও কাটিয়ে উঠা সম্ভব কিনা জানিনা। কারণ অনেক হলই ভাড়ায় চলে, ঠিকমতো চালাতে পারছেনা। কিছু বন্ধও হয়ে যাচ্ছে একবারে। আর এরমধ্যে যদি হল খুলেও এসব ছবি মুক্তি দিলে দর্শক দেখতে আসবে কিনা, সেসব নিয়ে অনিশ্চয়তায় রয়েছি আমরা। তারপরও আমি আশার আলো দেখছি, কারণ এরইমধ্যে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিনেমা হল নির্মাণ ও উন্নয়নের জন্য ১ হাজার কোটি টাকার তহবিল ঘোষণা করেছেন।

এ টাকা দিয়ে আমরা নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও পুরাতন হল মেরামত করে নতুনভাবে ভালো কিছুই শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি। আমাদের সিনেমার যতগুলো সংস্থা আছে সবার তাদরকিতে যদি এ কাজগুলো করা যায় তাহলে সামনে অবশ্যই ভালো কিছু হবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris