বুধবার

২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে নারীর মোবাইল ফোন-ব্যাগ ছিনতাই, তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার

নতুন অর্থবছরে খেলাপি ঋণ বাড়ার শঙ্কা

Paris
Update : সোমবার, ৫ জুলাই, ২০২১

এফএনএস : করোনা মহামারিনর কারণে অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান আশঙ্কা করছে, দেশের রাষ্ট্রায়াত্ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বাড়তে পারে। এ কারণে সদ্য শুরু হওয়া অর্থবছরে খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ৫০০ কোটি টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২০২২ অর্থবছরের জন্য ৬ রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংকের মোট খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার ৮০০ কোটি টাকা করা হয়েছে। পাশাপাশি অবলোপনকৃত ঋণ আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২০২১ অর্থবছরে খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে মাত্র ৫০০ কোটি টাকা কমানো হয়েছে।

খেলাপি ঋণের স্থিতির ক্ষেত্রে নতুন অর্থবছরে একমাত্র জনতা ব্যাংক-এর লক্ষ্যমাত্রা ১ হাজার কোটি টাকা শিথিল করা হয়েছে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতি ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছিল। নতুন অর্থবছরে সেটি বাড়িয়ে ১১ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। কারণ অতীতে রাষ্ট্রায়াত্ব এই ব্যাংকটি খেলাপি ঋণ আদায়ে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোসহ বিভাগের আওতাধীন ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ২০২১-২০২২ অর্থবছরের বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি (এপিএ) ভার্চুয়ালি সম্পাদন করা হয়েছে।

এই চুক্তির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংকের খেলাপি ঋণসহ বিভিন্ন সূচকের টার্গেট নিধারণ করে দেওয়া হয়েছে। সূত্র জানায়, চুক্তি অনুযায়ী বেসিক ব্যাংকে খেলাপি ঋণের স্থিতি গত অর্থবছরের চেয়ে আরও ৫০০ কোটি টাকা কমাতে বলা হয়েছে। গত অর্থবছরে ব্যাংকটির খেলাপি ঋণের স্থিতি ৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে বলা হয়েছিল। নতুন অর্থবছরে স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৭ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সূত্র জানায়, অবশিষ্ট চারটি ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।

অর্থাৎ গত অর্থবছরে ব্যাংকগুলোর নিজ নিজ লক্ষ্যমাত্রা যা ছিল, এবারও তাই রাখা হয়েছে। নতুন অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ১০ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ৪ হাজার কোটি টাকা ও বিডিবিএল-এর ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ৭০০ কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। খেলাপি ঋণের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায়, বিগত বছরগুলোতে রাষ্ট্রায়াত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ অধিকাংশ বছরই ৪০ হাজার কোটি টাকার বেশি ছিল।

যেমন-২০২০ সালের জুন শেষে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি ছিল ৪২ হাজার ১২৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। এরপর সেপ্টেম্বর শেষে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ১১৮ কোটি ১১ লাখ টাকা। ডিসেম্বর শেষে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৪১ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। সর্বশেষ চলতি বছরের গত মার্চ প্রান্তিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয়টি বাণিজ্যিক ব্যাংকের খেলাপি ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। সূত্র জানায়, চুক্তি অনুযায়ী ব্যাংকগুলো চলতি অর্থবছরে শ্রেণিকৃত ঋণ থেকে মোট ১ হাজার ৬০৫ কোটি আদায় করবে।

সমাপ্ত অর্থবছরেও একই লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংককে ৪৫০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংককে ৪৫০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংককে ৪০০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংককে ১৪০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংককে ১২৫ কোটি টাকা ও বিডিবিএল-কে ৪০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। অন্যদিকে আগামী অর্থবছরে রাষ্ট্রায়ত্ত ছয় ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের মোট স্থিতির লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ১৭ হাজার ২০৭ কোটি টাকা। সমাপ্ত অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৭ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা। নতুন অর্থবছরে সোনালী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ৬ হাজার ৯২০ কোটি টাকা।

জনতা ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। অগ্রণী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ৪ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা। রূপালী ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ৫০০ কোটি টাকা ও বেসিক ব্যাংকের অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ৪৩৭ কোটি টাকার মধ্যে সীমিত রাখতে হবে। সূত্র জানায়, নতুন অর্থবছরে একমাত্র বিডিবিএল-এর অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতির ক্ষেত্রে সামান্য পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিডিবিএল-এর অবলোপনকৃত ঋণের স্থিতি ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে হবে।

সমাপ্ত অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি অর্থবছরে ব্যাংকটিকে গত বছরের তুলনায় ৫৬ কোটি টাকা বেশি কমাতে হবে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী নতুন অর্থবছরে অবলোপনকৃত ঋণ থেকে ছয় ব্যাংককে মোট ২০৫ কোটি টাকা আদায় করতে হবে। এ লক্ষ্যমাত্রাও গত অর্থবছরের মত অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংককে ৫০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংককে ৪০ কোটি টাকা, অগ্রণী ব্যাংককে ৮০ কোটি টাকা, রূপালী ব্যাংককে ১৫ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংককে ১০ কোটি টাকা ও বিডিবিএল-কে ১০ কোটি টাকা আদায় করতে হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris