শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
বাগমারায় এক স্কুলের সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এলাকাছাড়া! বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল জাতীয় চার নেতা কখনো মৃত্যু ভয় করেননি : লিটন প্রেমিককে কুপিয়ে জখম করল প্রেমিকা! গোদাগাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ২ আসামি গ্রেপ্তার এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের সরে দাঁড়াতে নির্দেশ সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তিন প্রতারক রাজশাহীতে গ্রেফতার পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করে লাশ গুম করেছিলেন পুত্রবধূ! রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনে ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা মুজিবনগর সরকার আমাদের প্রেরণা : আসাদ

গোদাগাড়ীতে নবাগত ওসি যোগদান করেই মাদক-কিশোর গ্যাংগের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা

Paris
Update : সোমবার, ২৮ জুন, ২০২১

শহিদুল ইসলাম, গোদাগাড়ী : রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসাবে কামরুল ইসলাম যোগদান করেই যুদ্ধ ঘোষনা করেছেন মাদক ও কিশোর গ্যাংগের বিরুদ্ধে। এতে করে গোদাগাড়ী থানা এলাকায় স্বস্তি ফিরে এসেছে। করোনা পরিস্থিতি সারা বিশ্বকেই বিভিন্ন বিষয়ে নতুনভাবে ভাবিয়েছে, নতুন পথ দেখিয়েছে। লকডাউন শুরুর দিনগুলো পুলিশের কর্মতৎপরতা নতুনভাবে দেখার সুযোগ পায় বাংলাদেশের মানুষ। সম্ভবত এই প্রথম পুলিশ বাহিনীর দেশ জাতিকে সেবা করার ইচ্ছার বিষয়টি প্রবলভাবে অনুভূত হয়, যা পুরো জাতিকেই নতুন ভাবে নাড়া দেয়।

আমরা নতুনভাবে চিনতে শুরু করি পুলিশকে। এই জোয়ারে ভেসে যায় পুলিশ নিয়ে মানুষের মনে তৈরি হওয়া এত দিনের ক্ষোভ ও অনাস্থা। করোনা লকডাউনের তুমুল দুঃসময়ে অসহায় মানুষ তাঁদের পাশে গোদাগাড়ী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ কামরুল ইসলামসহ সকল পুলিশকে খুঁজে পান মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিংবা খাবারের প্যাকেট হাতে নিয়ে। অফিসার ইনচার্জ কামরুল ইসলাম পিছিয়ে পড়া হত দরিদ্রদের মাঝে খোজ খবর নিয়ে নিজেদের বেতনের অর্থায়নে ত্রান সামগ্রী পোঁছিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছেন।

এতে করে গোদাগাড়ীর পুলিশ মানুষের হৃদয়ের মাঝে স্থান করে নিয়েছে। কামরুল ইসলাম যোগদানের পর পুলিশের সেবা জনগনের দৌড় গোড়ায় নিয়ে যাওয়ার আপ্রান চেষ্ঠা করছেন। এতে করে জনগন হয়রানী থেকে মুক্ত হয়েছেন। সেবার মান আরও বাড়াতে নির্লস ভাবে কাজ করছেন। সাধারণ মানুষ তার কাছে এসে সরাসরি তাদের অভিযোগ বলতে পেরে সস্তি প্রকাশ করেছেন। ওসি কামরুল ইসলাম এমন মহাত উদ্দ্যোগ এলাকার আইন শৃঙখলা ঠিক রাখতে ভূমিকা পালন করবে। উপজেলার ইভটিজিং, সন্ত্রাস, জঙ্গি তৎপরতা, মাদক, জুয়া, চুরি ও ডাকাতির পরিমাণ কমেছে।

সেই সঙ্গে কমেছে এলাকায় অপরাধের সংখ্যাও। বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, গোদাগাড়ীর অবনতিশীল আইনশৃংখলা পরিস্থিতি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে যোগদানের পর পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরিয়ে এনেছেন তিনি। ‘‘পুলিশি জনতা, জনতায় পুলিশ’’। জনগনের প্রকৃত বন্ধু যে পুলিশ সেটা তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন গোদাগাড়ী উপজেলায়। নতুন ওসির চৌকুশ তৎপরতায় উপজেলা জুড়ে অপরাধ কমিয়ে প্রায় শুণ্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছেন। তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রম ও নিষ্ঠাবান তৎপরতায় জনমনে ফিরে এসেছে স্বস্তি। তবে এর ধারাবাহকিতা ধরে রাখার দাবী তুলেছেন শুসীল সমাজ।

তিনি দায়িত্ব নেবার পর গোটা উপজলোয় পুলিশের টহল বৃদ্ধির পাশাপাশি অভিযানে মাদক ব্যবসায়ী, মাদকসেবী, র্ধষণের আসামি, চোর ডাকাতসহ বহু সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেফতার করতে সক্ষমতা দেখিয়েছেন। ওসি কামরুল ইসলাম এর পারদর্শিতায় এমনকি ধর্ষনের মূল আসামী বন্ধুক যুদ্ধে নিহত হওয়ার ঘটনা ঘঠেছে এতে করে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ফিরে এসেছে। এতে করে ধর্ষণের মতন ন্যাক্কার জনক কাজ কমে আসবে বলে এলাকাবাসী অভিমত ব্যক্ত করেন। এছাড়াও উপজেলা সদরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের পুলিশির নিয়মিত টহলে কমেছে ছিন্নমূল অপরাধীদের দৌরত্ব পৌর শহরের ভিতর অবৈধ যানবাহন চলাচলও ব্যাপক কড়াকড়ি লক্ষ্যে করা গেছে।

আটক হয়েছে বহু নম্বরবিহীন মোটরসাইকেল। শৃংখলা ফিরে এসেছে যানবাহন চলাচলেও। যোগদানের পর ওসির এহেন তৎপরতায় খুশী গোদাগাড়ী উপজলোর র্সবস্তরের মানুষ। স্বস্তিতে আছেন জনসাধারণ। এ উপজেলার আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধীদের দ্রুত আইনের আওতায় নিয়ে আসতে এরই মধ্যে তিনি ৯টি ইউনয়িন ও ০২টি পৌরসভায় মেয়র, কাউন্সলির, চেয়ারম্যান, মেম্বার, স্থানীয় সাংবাদিক, বিট পুলিশিং এবং গ্রাম পুলিশদের নিয়ে মাদক, ইভটিজিং, সন্ত্রাস, জঙ্গি তৎপরতা, চুরি ডাকাতি বন্ধে সভা সমাবেশ করছেন।

তাঁর নেতৃত্বেই প্রতি রাতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে এলাকার দাগী চোর, ডাকাত এবং মাদককারবারীদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছেন। এলাকায় বিভিন্ন স্কুল, কলেজ মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষকদের নিয়ে সন্ত্রাস নকশকতা ও জঙ্গীবাদের বিরুদ্ধে সচতেনতামূলক সভা ও ধারাবাহিক মানব বন্ধনে সার্বিক সহযোগীতা করে র্বতমান সরকারের উন্নয়নের ধারাকে সচল রাখতে অভিমত ব্যক্ত করেছেন। গোদাগাড়ী পৌরসভা সহ উপজেলার কামারপাড়া (মেডিকেল মোড়), কলেজ মোড়, সারাংপুর, সুলতানগঞ্জ, জামাতির মোড়, হাটপাড়া, রেলেগেট, চাইপাড়া, মাদারপুর, সাগরপাড়া, মহিশালবাড়ী, ও মাদারপুর ডিমভাঙ্গায় আগে অবাধে মাদক বেচাকেনা করা হতো।

ওসি’র বিশেষ নজরদারি ও অভিযানের কারণে ইদানিং সেসব স্থানে কমে গেছে মাদককারবারী ও সেবীদের আনাগোনা। স্কুল কলেজের ছাত্রীদের আসা যাওয়ার পথে পুলিশের র্পযাপ্ত টহলের কারণে কমেছে ইভটিজিং বা মেয়েদের উত্ত্যক্তের ঘটনা। কমেছে বখাটেদের উৎপাত। প্রতিটি এলাকায় মসজিদ কমিটির অনুমতি ছাড়া অপরিচিত কাউকে মসজিদে রাত্রি যাপন এবং আসা যাওয়া করতে দেওয়া হচ্ছে না। উপজলোর কেউ নিখোঁজ রয়েছে কিনা তারও অনুসন্ধান করছেন তিনি। গোগ্রাম ইউপি চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বলনে, থানায় জিডি বা অভিযোগ দিতে গিয়ে এখন আর আগের মতো হয়রানির শিকার হতে হয়না।

ওসি কামরুল ইসলাম তিনি নিজেই সকলের অভিযোগ শুনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেন এবং কোন র্দুঘটনার খবর পেলে তিনি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে ছুটে যান। ওসি’র ব্যাপক তৎপরতায় উপজেলায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক র্পযায়ে চলে এসেছে বলে তিনি দাবি করেন। গোদাগাড়ী মডেল থানার উপপরির্দশক (এসআই) মিজানুর রহমান বলেন, ডিউটিরত পুলিশ সদস্যদের চাঙ্গা রাখতে ওসি স্যার ওয়ারলেস বা মোবাইল ফোনে কিছুক্ষণ পর পর খোঁজ নেন। ওসি স্যার এর উদ্যোম দেখে এখন সারারাত ডিউটিকেও আমাদের কষ্ট মনে হয়না।

ওসির বন্ধুসুলভ আচরণে থানার প্রতিটি পুলিশ সদস্য স্বাচ্ছন্দ্যে কাজ করে যাচ্ছেন। গোদাগাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শান্ত কুমার মজুমদার বলেন, ওসি কামরুল ইসলাম এর র্কাযক্রমে গোদাগাড়ী উপজেলার হত দরিদ্র পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠিদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। সাধারন মানুষ থানায় এসে আইনি সেবা পাচ্ছে। এই জন্য ওসির এই রকম র্কাযকলাপ অব্যাহত থাক এই আশা ব্যক্ত করেন। গোদাগাড়ী পৌরসভার ৩ নং প্যানেল মেয়র শহিদুল ইসলাম বলেন, ওসি কামরুল ইসলাম যোগদানের পর গোদাগাড়ীর আইন শৃংঙ্খলার উন্নতি হয়েছে।

স্কুল, কলেজের সামনে বখাটাদের আনা গোনা বন্ধ করতে সক্ষম হয়েছেন। তার এই ধারাবাহকিতা অব্যাহত থাকে যেন, এই বলে আশা ব্যক্ত করেন। উপজেলায় কী কী ধরণের অপরাধের সংখ্যা বেশি জানতে চাওয়া হলে ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, এখানকার প্রধান সমস্যা মাদক বলে তিনি উল্লেখ করে বলেন, আগে মাদক কারবারীদের নির্দিষ্ট স্পট থাকলেও পুলিশের তৎপরতায় এখন এলাকায় মাদকের নির্দিষ্ট কোন আস্তানা নেই। বহুবার আস্তানা তৈরি করতে চাইলেও পুলিশের বিশেষ নজরদারিতে তারা র্ব্যথ হয়েছে। পুলিশের অভিযানে শতাধিক চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও কুখ্যাত দাগী কয়কেজন আসামীকে গ্রেফতার করে তাদেরকে আইনের হাতে সোর্পদ করা হয়েছে।

পুিলশের নিয়মিত টহলের কারণে অনেকে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি গোদাগাড়ীর অপরাধ কমানোর কৃতিত্বের অংশীদার জনগণ, রাজনৈতিক নেতা, মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এবং জনপ্রতিনিধিরাও বলে তিনি দাবি করেন। তবে থানার জনবল ও বেশকিছু সমস্যা তুলে ধরে ওসি কামরুল ইসলাম বলেন, পোনে চার লক্ষ মানুষের নিরাপত্তা ও আইনশৃংখলা রক্ষায় থানায় যানবাহন বলতে ২টি গাড়ী। রাতে পুলিশকে গাড়ী ভাড়া নিয়ে ৯টি ইউনিয়নে টহল কাজ চালাতে হয়। এই বিশাল জনসংখ্যার বিপরীতে স্বল্প সংখ্যক পুলিশ সদস্য থাকায় অক্লান্ত পরিশ্রম করে দিন রাত পুলিশ সদস্যদের ডিউটি করতে হয়।

জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ন্যায় ও নিষ্ঠার সঙ্গে আজীবন কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলনে, এ থানাকে সব ধরণের অপরাধমুক্ত একটি আর্দশ মডেল থানা হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় নিয়ে কাজ শুরু করেছি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে। উল্লেখ্য যে, সাবেক অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খলিলুর রহমান পাটোয়ারী বদলী হওয়ার পর নবাগত অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কামরুল ইসলাম ১৬/০৬/২০২১ ইং তারিখে গোদাগাড়ী মডেল থানায় যোগদান করেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris