বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

তাপমাত্রা বাড়ার কারণে হওয়া অতিবৃষ্টি দেশের জন্য মঙ্গলজনক হবার সম্ভাবনা

Paris
Update : বুধবার, ১৬ জুন, ২০২১

এফএনএস : তাপমাত্রা বাড়ার কারণে দেশে অতিবৃষ্টি হচ্ছে। চলতি জুন মাসের শুরু থেকেই রাজধানী ঢাকায় অতিবৃষ্টি দেখা যাচ্ছে। গত এক দশক ধরে বাংলাদেশে বাৎসরিক মোট বৃষ্টিপাত বাড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে অতিবৃষ্টিতে ভয়ের কিছু নেই। বরং অতিবৃষ্টিতে দেশের ৪টি পরিবেশগত সংকটের সমাধানের সম্ভাবনা রয়েছে। পরিবেশবিদ এবং আবহাওয়া অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ভারতীয় উপমহাদেশে বর্ষা মৌসুম ক্রমশ শক্তিশালী হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশেও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বাড়ছে। আর আগামী ২০৩০ সালে এদেশে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ১০-১৫ শতাংশ এবং ২০৭৫ সালে প্রায় ২৭ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিগত ২০১৫ এবং ২০১৭ সালে গোটা দেশে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হয়েছিল। তখন বন্যাও দেখা দেয়। আর ২০২০ সালের বন্যার পেছনেও ছিল অতিবৃষ্টি। তাছাড়া ২০১১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে শুধুমাত্র ২০১৪ সালেই বেশি বৃষ্টিপাত হয়নি।

সূত্র জানায়, তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে বৃষ্টিপাত বাড়ার সম্পর্ক রয়েছে। মূলত দেশে তাপমাত্রা বাড়ার কারণেই অতিবৃষ্টি হচ্ছে। ভারত মহাসাগর এবং বঙ্গোপসাগরে গত কয়েক বছর ধরে তাপমাত্রা অত্যাধিক বেড়েছে। ফলে একটা ব্যতিক্রমধর্মী জলবায়ুগত অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বায়ুমণ্ডলে বেশি জলীয় বাষ্প যাওয়ার ফলে বেশি বৃষ্টিপাত হচ্ছে। তাছাড়া বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের স্থানীয় একটি রূপও অতিবৃষ্টি।

যদি গরমকালে তাপমাত্রা বৃদ্ধি কমানো যায় তবে বৃষ্টিও সহনীয় মাত্রায় নেমে আসবে। সেজন্য দেশে জলাশয় বৃদ্ধি এবং গাছপালা বাড়ানো ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রকৃতিকে প্রাকৃতিকভাবেই মোকাবেলা করতে হবে। জলাশয় তৈরি এবং বনায়নের মাধ্যমে তাপমাত্রা কমানো সম্ভব। ফলে অতিবৃষ্টি এবং অসময়ে বৃষ্টি কমবে। সেজন্য এলাকাভিত্তিক আলাদা আলাদা বাস্তবতা অনুযায়ী পরিকল্পনা করে কাজ করতে হবে।

এদিকে বিশেষজ্ঞরা এদেশে অতিবৃষ্টির ইতিবাচক দিকও রয়েছে বলে জানান। তাদের মতে, ক্রমবর্ধমান বৃষ্টিপাত দেশের ৪টি সংকটের সমাধান হতে পারে। সেগুলো হচ্ছে- (১) দেশে রাসায়নিক সারের অপব্যবহারের কারণে মাটির উর্বরতা কমে গেছে। অতিবৃষ্টির বন্যা পলির মাধ্যমে জমির উর্বরতা বাড়াতে সহযোগিতা করে।

যদি বন্যায় ফসলের ক্ষতি ন্যূনতম পর্যায়ে নামিয়ে আনা যায় তাহলে বন্যা পরবর্তী উৎপাদন বৃদ্ধিতে ওই ক্ষতিটা পুষিয়ে যাবে। (২) দেশের বেশিরভাগ নদীর পানি উজান থেকে আসে। কিন্তু বৃষ্টি কম হতে হতে এদেশের নদীগুলোর নাব্যতা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যদি পর্যাপ্ত পানি আসতো তাহলে নদীর নাব্যতা ক্ষতিগ্রস্ত হতো না। যেহেতু পানি কম তাই নদীর মাঝে চর জমেছে। বেশি বৃষ্টি হলে এ সমস্যার সমাধান হবে। (৩) ঢাকাসহ সারাদেশেই ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে।

এখন বৃষ্টি বেশি হলে ওই ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব আর (৪) উজান থেকে পর্যাপ্ত পানি না আসায় শুকনো মৌসুমে নদ-নদীর পানিপ্রবাহ স্বাভাবিক মাত্রায় থাকে না। ফলে নদীর পানির বিপুল চাপের কারণে সমুদ্রের লোনাপানি যতোটুকু এলাকাজুড়ে আটকে থাকার কথা ততোটুকু থাকে না। বরং পানির প্রবাহ কম থাকার কারণে সমুদ্রের লোনাপানি স্থলভাগের কাছাকাছি চলে আসে।

ফলে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বিপুল এলাকায় লবণাক্ততা বেড়ে যায়। তাতে নষ্ট হচ্ছে ম্যানগ্রোভ অঞ্চল এবং অস্তিত্ব নিয়ে হুমকিতে পড়েছে বিভিন্ন দেশী প্রজাতির শস্য। বৃষ্টিই এর সমাধান করতে পারে।
অন্যদিকে অতিবৃষ্টি প্রসঙ্গে পরিবেশবিদ প্রফেসর আহমেদ কামরুজ্জামান মজুমদার জানান, আগে দুই-তিন দশক জুড়ে বৃষ্টিপাত দিন দিন কমছিলো। তবে গত প্রায় এক দশক ধরে বৃষ্টিপাত বাড়ছে। বৃষ্টিপাত কমের কারণে দেশের অনেক জায়গায় নদী কৃত্রিমভাবে খনন করতে হচ্ছে।

যা খুবই ব্যয়বহুল এবং তা স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না। নদী বিজ্ঞানে এই ধরনের খনন কাজকে সাপোর্টও করা হয় না। বন্যা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম সেরা দেশ। কৃষকরা বন্যা মোকাবেলা করেই শস্য ফলাচ্ছে। গত দুই-তিন দশক ধরে পানি স্বল্পতার কারণে কৃষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেজন্যই পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে তা সুখবর। কারণ বৃষ্টিতে শস্যগুলোর দেশীয় প্রজাতিই টিকে যাবে।

ফলে নতুন করে বিদেশ থেকে কোনো প্রজাতি আনতে হবে না। সেক্ষেত্রে বন্যা ব্যবস্থাপনার জন্য দখল হওয়া জলাভূমি-খাল ইত্যাদি উদ্ধার করতে হবে। বন্যার অতিরিক্ত পানি যদি ওই জলাভূমি-খালে থাকতো তাহলে বসতিতে পানি আসতো না। তাছাড়া ওই জলাভূমি চাষের কাজে ব্যবহার করে কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা চাঙ্গা রাখাও সম্ভব।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris