বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

নতুন অর্থবছরে পণ্য আমদানিতে অগ্রিম আয়করে বড় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ

Paris
Update : সোমবার, ৩১ মে, ২০২১

এফএনএস : অগ্রিম আয়কর (এআইটি) এক ধরনের কর, যা বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে আমদানিকৃত পণ্য থেকে আদায় করা হয়। তবে ভোগ্যপণ্য আমদানিতে ওই কর আদায় করা হয় না। মূলত অনিবন্ধিত আমদানিকারকদের করের আওতায় আনতে ২০০৭ সালে ওই কর ব্যবস্থা চালু করা হয়। কিন্তু আসন্ন বাজেটে পণ্য আমদানিতে অগ্রিম আয়করে বড় ধরনের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। সেক্ষেত্রে স্থানীয় শিল্পকে সহায়তা দিতে কাঁচামালের কর কমানো হচ্ছে।

নতুন অর্থবছরে অগ্রিম আয়কর ৪ স্তরের পরিবর্তে ৬ স্তরে আদায় করা হবে। আর তার সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। অর্থ মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, উৎসে কর ও অগ্রিম আয়কর থেকে সরকারের সিংহভাগ আয়কর আদায় হয়। সেজন্য আগামী বাজেটে ওই দুটি খাতকে অধিকতর যৌক্তিকীকরণ করার পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজের সংখ্যা বাড়াতে অগ্রিম আয়করে ছাড় দেয়া হচ্ছে।

পাশাপাশি বিলাসী পণ্যে অগ্রিম আয়করের পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। তাছাড়া বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আগের মতোই ১৮৯টি আইটেমে কর থাকছে না। বর্তমানে পণ্যভেদে ৪ স্তরে অগ্রিম আয়কর আদায় করা হয়। সেগুলো হচ্ছে ০, ২, ৩ ও ৫ শতাংশ। আগামী বাজেটে সেটিকে ৬ স্তরে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে ০, ১, ২, ৩, ৫, ২০ শতাংশ। তার বাইরে স্টিল আইটেমে টনপ্রতি ৫০০ টাকা এবং ভুটান থেকে নির্দিষ্ট আইটেমের পণ্য আমদানিতে এআইটি দিতে হবে না।

সূত্র জানায়, আসন্ন বাজেটে সমুদ্রগামী জাহাজের অগ্রিম আয়কর ১ শতাংশ করা হচ্ছে। বর্তমানে সেটি ২ শতাংশ রয়েছে। তাছাড়া ইথাইল অ্যালকোহল, স্পিরিট, আঙ্গুরের ওয়াইন ও মার্ক, হুইস্কি, রাম অ্যান্ড টাফিয়া, জিন অ্যান্ড জেনেভা, ভদকা, মদজাতীয় পণ্য এবং সুগন্ধি আমদানিতে অগ্রিম আয়কর ২০ শতাংশ করা হচ্ছে। তবে স্থানীয় সিমেন্ট শিল্পের ক্লিংকার আমদানিতে উৎসে কর ৩ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হচ্ছে।

তবে জীবিত প্রাণী যেমন গরু, ছাগল, মহিষ, মুরগি ও একদিন বয়সি মুরগির বাচ্চা, হাঁস, টারকি, স্বাদু পানি ও সামুদ্রিক মাছ, কাঁকড়া, চিংড়ির মতো খাদ্যসামগ্রীকে আগের মতোই অব্যাহতিপ্রাপ্ত পণ্যের তালিকায় রাখা হচ্ছে।

তাছাড়া আলু, পেঁয়াজ, বাদাম, ডাল, ভুট্টা, আটা-ময়দা, সয়াবিন বীজ, সূর্যমুখীর বীজ, সরিষার বীজ, শাকসবজির বীজ, সুগার বিট, ওয়েল কেক, পশু খাদ্য ও ভিটামিনসামগ্রী, ইউরিয়া সার, জিংক সালফেট, পটাশিয়াম ক্লোরাইড, তুলা, কম্পিউটার প্রিন্টার ও কালি, প্রিন্টারের যন্ত্রাংশ মেমোরি কার্ডসহ মোট ১৮৯ আইটেমের পণ্যকে অব্যাহতির তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে ওই তালিকা থেকে দেশে উৎপাদিত বিদেশি ফল ও সবজি বাদ দেয়া হয়েছে। যেমন ক্যাপসিকাম, ব্রুকলি, গাজর। ওসব পণ্য আনতে ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর দিতে হবে।

সূত্র আরো জানায়, ২ শতাংশ অগ্রিম কর বহাল থাকা পণ্যের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রসুন, ক্লিংকার, কেরোসিন, জেট ফুয়েল, ফার্নেস ওয়েল, বিউটেন, প্রপেন, ডিজেল, পেট্রোলিয়াম, বিটুমিন, রড, এঙ্গেল, বার, মোবাইল ফোন, মোবাইল ফোনের সার্কিট বোর্ড, মাদার বোর্ড, কিপ্যাড, এয়ারফোন, মাইক্রোফোনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি এবং পশম ছাড়া ভেড়ার চামড়া।

তার বাইরে চাল, গম, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, ছোলা, মটরডাল, সব ধরনের ডাল, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ভুট্টা, আটা-ময়দা, লবণ, পরিশোধিত তেল, চিনি, কালো গোলমরিচ, দারুচিনি, এলাচ, লবঙ্গ, খেজুর, তেজপাতা, পাট, তুলা, সুতাসহ সব ধরনের ফল সরবরাহের ক্ষেত্রে ভিত্তিমূল্যের ওপর ২ শতাংশ হারে উৎসে কর বহাল থাকছে।

এদিকে বাজেটে পণ্য সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর হারে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হচ্ছে। যেমন ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর হার ৩ শতাংশ করা হচ্ছে। বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত উৎসে করের দুটি স্লাব আছে। ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ২ শতাংশ এবং ১৫ থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৩ শতাংশ। তাছাড়া আগামী বাজেটে ৫০ লাখ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত উৎসে কর হার ৫ শতাংশ করা হচ্ছে।

বর্তমানে ৫০ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত ৪ শতাংশ উৎসে কর বহাল আছে। আর এক কোটি টাকার বেশি সরবরাহের ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ কর বহাল আছে। আসন্ন বাজেটে ২ কোটি টাকার বেশি সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে কর ৭ শতাংশ করা হচ্ছে।

অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি ও গবেষণা সংস্থা বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্টের (বিল্ড) চেয়ারম্যান আবুল কাশেম খান জানান, কোনো কর অগ্রিম নেয়ার যৌক্তিকতাই নেই। হোক সেটা অগ্রিম আয়কর (এআইটি) বা আগাম কর (এটি)। এই করোনা পরিস্থিতিতে তা আরো ভয়াবহ। আগাম কর বা অগ্রিম আয়কর নেয়া হলে ব্যবসার ক্যাশ ফ্লো কমে যায়। তখন ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই কষ্টসাধ্য হয়ে পড়বে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris