শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

সড়ক পথের চাপ আকাশ পথে

Paris
Update : সোমবার, ১০ মে, ২০২১

এফএনএস : করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে বন্ধ রয়েছে দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ চলাচল। তবে সীমিত সংখ্যক অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চালু আছে। ঈদে ঘরমুখো মানুষ তাই ছুটছেন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের টিকিটের জন্য। যাত্রীদের চাপ সামলাতে বাড়তি ফ্লাইট চালাতে চাচ্ছে দেশি এয়ারলাইন্সগুলো। যদিও এয়ারলাইন্সগুলোকে ছয়টি বিমানবন্দরে ১৮টি ফ্লাইট পরিচালনার সংখ্যা বেঁধে দিয়েছে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক)। ঈদকে কেন্দ্র করে প্রতি বছরই আকাশ পথে বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটের চাহিদা বাড়ে।

তবে এ বছর সড়ক, নৌ ও রেলপথ বন্ধ থাকায় যাত্রীদের চাহিদাও বেড়েছে কয়েকগুণ। এয়ারলাইন্স ও ট্রাভেল এজেন্সিগুলো জানিয়েছে, প্রতিনিয়ত টিকিটের জন্য যোগাযোগ করছেন যাত্রীরা, কিন্তু চাহিদা অনুপাতে ফ্লাইট না থাকায় টিকিট দিতে পারছেন না তারা। ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত বিভিন্ন গন্তব্যের প্রায় সব টিকিট ইতোমধ্যে বিক্রি হয়ে গেছে। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রি করে জমজম এয়ার ট্রাভেলস। প্রতিষ্ঠানটির স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় প্লেনের টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি।

কিন্তু সে অনুপাতে ফ্লাইট না থাকায় আমরা টিকিট দিতে পারছি না। ১৩ তারিখ ঈদ হতে পারে, এ হিসাব করে ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।’ জানা গেছে, চাহিদা বাড়ায় টিকিটের দামও বেড়েছে। ১২ মে ঢাকা সৈয়দপুর রুটে ইউএস-বাংলার একটি টিকিটের দাম হয়েছে নয় হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত। একই দিনে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিটের দাম বেড়ে হয়েছে ৮ হাজার ৮শ’ টাকা। ১০ মে ইউএস-বাংলার ঢাকা-বরিশাল রুটের টিকিটের দাম ৯ হাজার টাকা। নভোএয়ার জানিয়েছে, ঢাকা-বরিশাল রুটের ১০ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের ১০ থেকে ১২ মে পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। ঢাকা-সৈয়দপুর রুটের ১০ থেকে ১৪ মে পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। রাজশাহী রুটের ১০ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে। জানা গেছে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ৪ এপ্রিল থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বন্ধ ছিল। ২১ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে চালু হয় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট। কক্সবাজার ছাড়া দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট চালানোর অনুমতি দেয় বেবিচক। শুরুতে ৬ রুটে ১১টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেয় বেবিচক। পরবর্তী সময়ে এয়ারলাইন্সগুলোর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও সাতটি ফ্লাইট বাড়িয়ে ১৮টি করে বেবিচক।

বেবিচক সূত্রে জানা গেছে, ২১ এপ্রিল থেকে সীমিত পরিসরে ফ্লাইট শুরু সময় ছয়টি রুটে প্রতিটি এয়ারলাইন্সকে ১১টি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়। এরমধ্যে যশোরে দুটি, চট্টগ্রামে তিনটি, সৈয়দপুরে দুটি, সিলেটে দুটি, বরিশালে একটি, রাজশাহীতে একটি ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারবে প্রতিটি এয়ারলাইন্স। সম্প্রতি যশোরে দুটি থেকে বাড়িয়ে চারটি, সৈয়দপুর দুটি থেকে বাড়িয়ে চারটি, চট্টগ্রামে তিনটি থেকে বাড়িয়ে পাঁচটি, রাজশাহীতে একটি থেকে দুটি ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এয়ারলাইন্সগুলো বলছে চাহিদা অনুপাতে অনুমোদিত ফ্লাইটের সঙ্গে পর্যাপ্ত নয়।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম বলেন, ‘স্বাস্থ্য সতর্কতা মেনে ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। যেহেতু চাহিদা বেড়েছে এজন্য আমরা ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়াতে আবেদন করেছি। অতিরিক্ত ফ্লাইটের অনুমতি না দিলেও, স্বাভাবিক সময়ের মতো ফ্লাইট পরিচালনার সুযোগ থাকলে এয়ারলাইন্সগুলোকে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে না।’ জানা গেছে, দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর, রাজশাহী ও বরিশাল অভ্যন্তরীণ এই সাতটি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে দেশি এয়ারলাইন্সগুলো। স্বাভাবিক সময়ে একটি এয়ারলাইন্স প্রতিদিন যশোরে পাঁচটি, চট্টগ্রামে পাঁচটি, কক্সবাজারে পাঁচটি, সৈয়দপুরে পাঁচটি, সিলেটে দুই থেকে চারটি, বরিশালে দুটি, রাজশাহীতে এক থেকে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করতো। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার বলেন, ‘আমরা ফ্লাইট বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছি। বেবিচক অনুমতি দিলে ঈদের সময় কিছু বাড়তি ফ্লাইট পরিচালনা করা হতে পারে।’

বর্তমানে বিমানবন্দরের প্রবেশমুখেই যাত্রীদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হয়। এরপর ভেতরে প্রবেশ করে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ফ্লাইটে উঠতে হচ্ছে যাত্রীদের। সংক্রমণ প্রতিরোধে এ ব্যবস্থা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে বেবিচক। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান বলেন, ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে মানুষের চলাচলকে বন্ধ করার জন্য। তারপরও জরুরি প্রয়োজন বিবেচনা করে সীমিত ফ্লাইটের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে পরবর্তী সময়ে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হবে।’


আরোও অন্যান্য খবর
Paris