শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
তীব্র তাপদাহে রাজশাহীতে হাসপাতালে বাড়ছে রোগী তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে প্রাইমারি স্কুলে অ্যাসেম্বলি না করানোর নির্দেশ আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির সিদ্ধান্ত মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শ্রমিকদের স্বার্থ রক্ষায় উদ্যোগ নিতে হবে : জাতিসংঘ রাজশাহীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেলের ৩ আরোহী নিহত রাজশাহীতে বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৫২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত ধামুইরহাটে ভূয়া সিআইডি গ্রেফতার রাজশাহীতে বিভাগীয় পেনশন মেলা অনুষ্ঠিত স্ত্রীকে কারাদণ্ড দেওয়া নিয়ে পাকিস্তানের সেনাপ্রধানকে ইমরান খানের হুমকি ইরানের ইসফাহান কেন হামলার টার্গেট?

রামেক হারাতে যাচ্ছে তিনগুন ক্ষমতা সম্পন্ন করোনা পরীক্ষার পিসিআর!

Paris
Update : শনিবার, ১ মে, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : জনবল সংকটের অজুহাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) নামে বরাদ্দকৃত বর্তমানের চেয়ে তিনগুন ক্ষমতা সম্পন্ন পিসিআর মেশিন হারাতে যাচ্ছে রাজশাহীবাসী। বরাদ্দকৃত এই মেশিনের মাধ্যমে একবারেই ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব। বর্তমানে রামেকে থাকা মেশিনে একবারে সর্বোচ্চ ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। আর তিনগুন কার্যক্ষমতা সম্পন্ন নতুন মেশিনটি নিলে রাজশাহীতে নমুনার পরীক্ষা বাড়বে। শুধু তাই নয়, নমুনা ঢাকাতে পাঠানোরও দরকার হবে না। কিন্তু শুধু লোকবল সংকটের অজুহাতে নতুন এই মেশিনটি নিতে চাচ্ছেনা রামেক কর্তৃপক্ষ। এ অবস্থায় মেশিনটি খুলনায় চলে যেতে পারে বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ বিষয়ে রামেকের অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বরাদ্দকৃত এই পিসিআর মেশিন প্রয়োজন নেই, বিষয়টি এমন নয়। কিন্তু এই জনবল দিয়ে আরেকটি ল্যাব চালানো সম্ভব না। তাই বিষয়টা আমরা মন্ত্রণালয়কে লিখেছি। সেখানে জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চাহিদামত জনবল ছাড়া শুধু মেশিন দিলে তো আমরা চালাতে পারব না। কারণ, জনবল ছাড়া নতুন এই মেশিন নিয়ে যদি কাজই করতে না পারি তাহলে আবার উল্টাপাল্টা সংবাদ পরিবেশন শুরু হবে।’
অধ্যক্ষ ডা. নওশাদ আলী বলেন, ‘আমাদের এখানে এখন চার শিফটে নমুনা পরীক্ষা করা হয়।

এর জন্যই যে লোকবল দরকার, সেটিই আমাদের এখানে নেই। কিছু দিন আগেই একসঙ্গে ল্যাবের আটজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলেন। তাদের ল্যাব থেকে দূরে থাকতে হলো। তখনই কাজ করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছিল। সে সময় আমাদের কার্যক্রম পরিচালনায় সমস্যার বিষয়টি নয়, বরং আমাদেরকে নিয়ে উল্টাপাল্টা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখেই আমরা মন্ত্রণালয়কে লিখেছি যে, এই জনবল দিয়ে আরেকটি ল্যাব চালানো সম্ভব না। এখন বিষয়টি যদি মন্ত্রনালয় গুরুত্ব দেয় তাহলে, বরাদ্দকৃত নতুন এই পিসিআর মেশিনের সাথে জনবল দিবে।’ এ সময় শঙ্কা নিয়ে রামেক অধ্যক্ষ বলেন, বিভিন্নভাবে শোনা যাচ্ছে খুলনায় পিসিআর মেশিন নেই। তাই সম্ভবত আমাদের নামে বরাদ্দকৃত এই মেশিনটি খুলনায় পাঠিয়ে দেয়া হতে পারে।

এদিকে, রাজশাহী বিভাগে বেড়ে গেছে করোনা নমমুা পরীক্ষার চাপ। এখন শুধু রাজশাহী ও বগুড়ায় বিভাগের আট জেলার করোনার নমুনা পরীক্ষা করা হয়। সব নমুনা পরীক্ষা সম্ভব না হওয়ায় ঢাকাতে পাঠাতে হয়। এ অবস্থায় রাজশাহী বিভাগের জন্য বরাদ্দ তিনটি পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন (পিসিআর) মেশিন জনবল সংকটের কারণে রাজশাহী তা নিতে পারছে না।

জানা গেছে, রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) নামে এই মেশিনটি বরাদ্দ হয়েছে। এছাড়া পাবনা মেডিকেল কলেজ ও বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজে (শজিমেক) একটি করে পিসিআর মেশিন বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে বগুড়া ও রাজশাহীতে আগে থেকেই পিসিআর মেশিন থাকলেও নতুন পাচ্ছে পাবনা। এই জেলার নমুনা এখন কখনও রাজশাহীতে আবার কখনও বগুড়ায় পরীক্ষা করা হয়ে থাকে।

রাজশাহীতে এখন জয়পুরহাট, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁর নমুনাও পরীক্ষা পরীক্ষা হয় রামেকে। আর রামেক হাসপাতালে আরেকটি পিসিআর ল্যাব থাকলেও সেখানে শুধু ভর্তি থাকা রোগী, চিকিৎসক, নার্স এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। শুধু রামেকের একটি পিসিআর ল্যাবেই অধিক সংখ্যক নমুনা পরীক্ষা করা হয়। চার শিফটে এখানে প্রতিদিন ৩৭৬টি করে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রতি শিফটে ৯৪টি নমুনার পরীক্ষা করা হয়। এ অবস্থায় আরেকটি মেশিন চালানো চাপ মনে করছে রামেক কর্তৃপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রামেকে নতুন পিসিআর মেশিন স্থাপনের দায়িত্ব গণপূর্ত বিভাগের। কিন্তু নতুন আরেকটি ল্যাব স্থাপনে আগ্রহ দেখাচ্ছে না রামেক। নতুন ল্যাবের জায়গা নির্ধারণ না হওয়ায় গণপূর্ত অধিদপ্তর কোন কাজও শুরু করতে পারেনি। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার রাজশাহী বিভাগীয় উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় বিষয়টি আলোচিত হয়। সভায় গণপূর্তের পক্ষ থেকে নিজেদের প্রস্তুতি থাকার কথা জানানো হয়। তবে সভায় মেশিনটি নেয়ার বিষয়ে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। সভায় বিভাগীয় কমিশনার ড. হুমায়ুন কবীর মেশিনটি দ্রুত স্থাপনে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরিচালককে তাগিদ দেন।

এ বিষয়ে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. হাবিবুল আহসান তালুকদার বলেন, ‘রাজশাহী বিভাগের জন্য নতুন তিনটি পিসিআর মেশিন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, পাবনা মেডিকেল কলেজ ও শজিমেকে এগুলো বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। গণপূর্ত অধিদপ্তর এসব মেশিন বসানোর জন্য প্রয়োজনীয় কাজ করছে। কাজ শেষ হলেই মেশিন চলে আসবে। কিন্তু রাজশাহীর মেশিনটি নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।

এটা দূর করা গেলে আগামী একমাসের মধ্যেই মেশিনটি চালু করা যাবে।’ তিনি বলেন, ‘পাবনা ও বগুড়ায় ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গেছে। তবে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এটির জায়গা নির্ধারণ করে দেয়নি। তাঁরা এটি নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দে আছে এটি নিবে কী নিবে না। মেশিনটি রাজশাহীর অন্য কোথাও বসানোরও সুযোগ নেই। রামেক না নিলে এটি অন্য কোন জেলায় চলে যাবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, নতুন যে মেশিন দেয়া হচ্ছে তাতে একবারেই ২৮২টি নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব।

বর্তমানে রামেকে থাকা মেশিনে একবারে সর্বোচ্চ ৯৪টি নমুনা পরীক্ষা করা যায়। নতুন মেশিনটির কার্যক্ষমতাও এখনকার মেশিনের দ্বিগুণ। নতুন মেশিনটি নিলে রাজশাহীতে নমুনার পরীক্ষা বাড়বে। তখন আর নমুনা ঢাকায় পাঠানোর দরকার হবে না। কিন্তু শুধু লোকবল সংকটে মেশিনটি নিতে পারছে না রামেক। এ অবস্থায় মেশিনটি খুলনায় চলে যেতে পারে বলেও সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris