শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মামুনুলের অ্যাকাউন্টে ছয় কোটি টাকা, হেফাজতের ৩১৩ অর্থদাতা চিহ্নিত, কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী ঝর্ণা উদ্ধার

Paris
Update : বুধবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : হেফাজতে ইসলামের অর্থের যোগানদাতা হিসেবে ৩১৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সদর দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, হেফাজতে ইসলামের অর্থের যোগানদাতা ৩১৩ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মামুনুল হকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ৬ কোটি টাকার লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আমির জুনায়েদ বাবুনগরীর ছেলের বিয়েতেই সাবেক আমির আল্লামা শফীকে সরিয়ে দেয়ার পরিকল্পনা হয়। ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে মামুনুল হক, জুনায়েদ আল হাবিবসহ কয়েকজন নেতার বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে আল্লামা শফীকে সরিয়ে বাবুনগরীকে আমির করার পরিকল্পনা করা হয়। ২৬ মার্চ থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক সহিংসতার ঘটনায় হেফাজতে ইলামের সংশ্লিষ্ট নেতাদের পর্যাক্রমে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরইমধ্যে রোববার হেফাজতের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। গত ১৮ এপ্রিল রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকে মামুনুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। ১৯ এপ্রিল তাকে একটি মামলায় সাত দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

২৬ এপ্রিল তাকে আদালতে হাজির করে অন্য দুই মামলায় আরও ১০ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ। মামুনুলকে জিজ্ঞাসাবাদের বিষয়ে পুলিশ জানায়, সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া হেফাজত নেতাদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। পাকিস্তানের একটি সংগঠনের আদলে তারা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে গঠন করে পাকিস্তানের মতো এ দেশকে গড়ে তুলতে চেয়েছিল। শনিবার গ্রেপ্তার হেফাজতের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমদ আবদুল কাদের ইসলামি ছাত্রশিবিরের একজন সাবেক সভাপতি। হেফাজতে ইসলামের অধিকাংশই জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত। হেফাজতে ইসলাম ও মাদ্রাসার শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে সরকার উৎখাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার পরিকল্পনা করছিলেন মামুনুল।

এদিকে হেফাজতে ইসলামের সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মামুনুল হকের রিসোর্টের সঙ্গীনি জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের মতিঝিল বিভাগের একটি দল ঝর্ণাকে মোহাম্মদপুরে মামুনুল হকের বোন দিলরুবার বাসা থেকে উদ্ধার করে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল গোয়েন্দা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, গতকাল (গত সোমবার) তার (ঝর্ণার) বাবা কলাবাগান থানায় একটি জিডি করেন। আমরা তাকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে সাহায্য করেছি। জানা গেছে, গত ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টের ঘটনাপ্রবাহের পর থেকে তার খোঁজ পাচ্ছিল না পরিবার। রিসোর্টকাণ্ডের পর ঝর্ণাকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন মামুনুল।

তাকে উদ্ধারে বাবা ওলিয়র রহমান ও বড় ছেলে আবদুর রহমান জামি ঢাকার দুটি থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। গত ৩ এপ্রিল ঝর্ণাকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের রয়্যাল রিসোর্টে গেলে মামুনুল হককে অবরুদ্ধ করেন স্থানীয়রা। পরে জিজ্ঞাসাবাদের মুখে ঝর্ণা এলোমেলো কথা বলেন। তার নাম বলেন আমিনা তাইয়্যেবা। তিনি দাবি করেন, তাদের বাড়ি খুলনা, বাবার নাম জাহিদুল ইসলাম। তবে পুলিশকে সেই রাতে ঝর্ণা নিজের নাম জানিয়ে বলেন, তার বাড়ি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায়, বাবার নাম ওলিয়র রহমান। সেই রাতে বিব্রতকর অবস্থা থেকে হেফাজত নেতা ও ঝর্ণাকে উদ্ধার করেন সংগঠনের স্থানীয় কর্মীরা। তবে এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris