শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাগমারায় জাফর আতংক!

Paris
Update : সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১

মচমইল থেকে সংবাদদাতা : গায়ের জোর আর সন্ত্রাসী বাহিনীর তান্ডবে লন্ডভন্ড কয়েকটি পরিবার। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর। কথা বললেই হত্যার হুমকী সহ একঘরে করা। সবকিছুই যেন জাফর মন্ডলের ইশারায়। জাফর মন্ডল সহ তার বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে পড়েছে পুরো গ্রামের লোকজন। হামলা, ভয়ভীতি আর ক্ষমতার দাপটে মুখ খুলছেননা ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। তাদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করলেও কোনই কাজে আসছেনা। জাফর মন্ডলের বিরুদ্ধে কথা বলায় চার মাস থেকে এক ঘরে করে রাখা হয়েছে মোজাম্মেল হকের পরিবারকে। থানা পুলিশের স্মরণাপন্ন হলেও হয়নি তার সমাধান।

গত ২৩ এপ্রিল রাতে জাফর বাহিনীর অতর্কিত হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন প্রায় ১০ জন। তাদের মধ্যে বর্তমানে কয়েক জন রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসাধিন রয়েছেন। গতকাল রোববার দুপুরে বাগমারা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে জাফর মন্ডল সহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন লেকেন আলী। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগীরা অভিযোগ কলেন, নরদাশ ইউনিয়নের সাইধারা গ্রামের মৃত জাদু মন্ডলের ছেলে জাফর মন্ডলের নেতৃত্বে ২০-২২ জন সন্ত্রাসী ক্যাডার বাহিনী গত ২৩ এপ্রিল রাত নয়টার দিকে সাইধারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে একটি সামাজিক সালিশ বৈঠকে অস্ত্র সহ লাঠিসোটা নিয়ে হামলা চালায়।

এ সালিশি বৈঠকের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে। এদের মধ্যে ৫ জনকে রাজশাহী মেডিকেলে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। এ ঘটনায় সাইধারা গ্রামের লেকেন আলী বাদী হয়ে জাফর মন্ডল ও তার সহযোগী ১৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত আরো ৮-১০ জনের নামে বাগমারা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ করলেও এখনও তা নথিভুক্ত করেননি বাগমারা থানা পুলিশ। ভুক্তভোগীরা জানান, গত জানুয়ারী মাসে মোজাম্মেল হক নামের এক ব্যক্তি একই এলাকার জয়পুর গ্রামের মৃত জোনাব আলীর মেয়ে নুরজাহানের নিকট থেকে এক শতক জমি ক্রয় করেন। ওই জমিতে মোজাম্মেল হকের পিতা-মাতার কবর থাকায় তা নুরজাহানের নিটক থেকে ক্রয় করে।

এদিকে মোজাম্মেল হকের ক্রয় কৃত ওই এক শতক জমি নুরজাহানের ভাইকে ফিরিয়ে দিতে চাপ দেয় জাফর মন্ডল। বর্তমানে কবরস্থানের ওই জায়গায় সাথে নুরজাহারের ভাই একটি খোলা টয়লেন তৈরি করেছেন। তারা আরো আিভযোগ করেন সাইধারা গ্রামে সামাজিক শৃংখলা বজায় রাখতে একটি কমিটি রয়েছে যাতে ২০১৩ সাল থেকে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন মোজাম্মেল হক। তিনিই বর্তমানে ওই গ্রামের বিভিন্ন বিষয়ে জাফর মন্ডল সহ স্থানীয় লোকজনকে নিয়ে সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে নানান সমস্যার মিমাংসা করেন। এদিকে মোজাম্মেল হককে বাদ দিতে জাফর মন্ডল আরেকটি বাহিনী গঠন করেছেন। যে বাহিনী দিয়ে জাফর মন্ডল তার বাড়িতে তৈরি করেছেন জাফরের আদালত। সেই আদালতে তার নেতৃত্বে জোর পূর্বক সালিশ বৈঠক করা হয়ে থাকে।

জাফর মন্ডল সহ তার বাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বললেই তাকে মারপিট করা হয়ে থাকে বলে অভিযোগ করা হয়। বর্তমানে ২৩ এপ্রিলের পর থেকে ঘরছাড়া রয়েছেন অন্তত ১০টি পরিবারের লোকজন। তারা বিভিন্ন আত্মীয়ের বাড়িতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাদের দাবী জানুয়ারী থেকে এখন পর্যন্ত থানায় অভিযোগ করে আসলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেননি পুলিশ। দ্রুত তারা যেন নিজ নিজ বাড়িতে ফিরতে পারে সে ব্যাপারেও তারা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভূক্তভোগী পরিবারের লোকজনের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সাইদুর রহমান, নুরুল ইসলাম, আব্দুল্লাহ আল নোমান, আলতাফ হোসেন, জিরু আমিন, আব্দুর রাজ্জাক সহ মোজাম্মেল হক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত জাফর মন্ডলের মুঠোফোনে যোগযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগকে অবাস্তব হিসেবে আক্ষায়িত করেন। তিনি বলেন আমি কোন পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়নি। এদিকে বাগমারা থানার ওসি তদন্ত আফজাল হোসেন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল সরেজমিনে পরিদর্শন করছি। উক্ত ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছে। পরবর্তীতে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris