শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন জমা দিতে পারেনি বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়ী

Paris
Update : সোমবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : করোনার প্রকোপ রোধে চলমান সরকারি বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে বিপুলসংখ্যক ব্যবসায়ীই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। দেশে বর্তমানে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২ লাখ ৫১ হাজার ৮২৯টি। তার মধ্যে এক লাখ ৪৫ হাজারের বেশি ব্যবসায়ী এপ্রিল মাসের ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়নি। দেশে অর্থাৎ ৫৭ দশমিক ৭২ শতাংশ ব্যবসায়ী রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। অথচ মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে রিটার্ন দেয়া বাধ্যতামূলক ছিল। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এনবিআরের ১২টি কমিশনারেটের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ ভ্যাট কমিশনারেটে সবচেয়ে কম রিটার্ন জমা পড়েছে। সেখানে ৬২ হাজার ২০০টি নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে এপ্রিল মাসে মাত্র ৮ হাজার ৯০৪টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিয়েছে। আর ঢাকা শহর ও আশপাশের জেলার নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের ৫ ভাগের ৪ ভাগই রিটার্ন জমা দিতে পারেনি। ভ্যাট রিটার্ন থেকে প্রতিমাসে ১০-১২ হাজার কোটি টাকা আসে। অথচ চলতি এপ্রিল মাসে তা কমে ৭ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। তবে কুমিল্লা ও যশোর ভ্যাট অফিস অনলাইনে ভ্যাট রিটার্নে সফলতা দেখিয়েছে। ওই দুটি কমিশনারেটে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন জমার হার ৯৫ শতাংশের বেশি।

সূত্র জানায়, এনবিআর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন দাখিল করার জন্য গত ৮ এপ্রিল ব্যবসায়ীদের অনুরোধ জানায়। সে বিষয়ে এনবিআর থেকে জারি করা আদেশে বলা হয়, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক আইন ও বিধিমালা অনুসারে করদাতাদের মাস শেষ হওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ভ্যাটি রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অন্যথায় সুদ ও জরিমানা আরোপের বিধান রয়েছে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের মাসিক ভ্যাট দাখিলপত্র দাখিলে সহায়তা করা ও দাখিলপত্র গ্রহণের সুবিধার্থে সরকার ঘোষিত বিধিনিষেধকালে দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতরসমূহ খোলা রাখা হয়েছে।

করদাতাগণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংশ্লিষ্ট ভ্যাট দফতরে দাখিলপত্র পেশ করতে পারবেন। ওই সময়ে কর্মচারী-কর্মকর্তারা করোনা সংক্রান্ত সতর্কতা ও নিরাপত্তামূলক সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে দাখিলপত্র গ্রহণ ও রাজস্ব আদায় করবেন। নতুন ভ্যাট আইনে প্রতি মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয়ার বিধান আছে। তা না হলে ১০ হাজার টাকা জরিমানা এবং নির্ধারিত ভ্যাটের টাকার ওপর ২ শতাংশ হারে সুদ আরোপ হয়।

এদিকে অনলাইনে ভ্যাট রিটার্নে সফলতা প্রসঙ্গে কুমিল্লা কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাটের কমিশনার মোহাম্মদ বেলাল হোসাইন চৌধুরী জানান, লকডাউনের মধ্যেও স্বল্পসংখ্যক জনবল নিয়ে গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করা হয়েছে। এ নিয়ে টানা ৮ বার অনলাইন ভ্যাট রিটার্ন জমায় প্রথম হলো কুমিল্লা ভ্যাট। দেশঈেস্খমে উদ্বুদ্ধ কর্মকর্তাদের পরিশ্রম ও সাফল্যের পিপাসা কুমিল্লা কমিশনারেটকে রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ও রিটার্ন দাখিলে সাফল্য এনে দিয়েছে।

অন্যদিকে বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ হেলাল উদ্দিন সরকারের কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় সুদ ও জরিমানা ছাড়া রিটার্ন জমার সুযোগ দাবি করেছেন। এ প্রসঙ্গে এনবিআরের পরিচালক (জনসংযোগ) সৈয়দ এ মু’মেন জানান, করদাতাদের সুবিধার কথা বিবেচনায় নিয়ে করোনা মহামারীর মধ্যেও দেশের সব কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট দফতর খোলা। তারপরও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে রিটার্ন দাখিল হয়নি। এখন ভবিষ্যত করণীয় সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris