শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তিতে সুরক্ষার বিষয় অগ্রাধিকার পাবে

Paris
Update : মঙ্গলবার, ২০ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘ এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব না হওয়ায় অটোপাস দিতে হয়েছে ২০২০ সালের এইচএসসি পরীক্ষায়। ২০২১ শিক্ষাবর্ষের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা আয়োজন নিয়েও দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। এদিকে দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় এখনো অনুষ্ঠিত হয়নি ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। কবে অনুষ্ঠিত হবে সে বিষয়েও নিশ্চয়তা নেই। এ অবস্থায় গাজীপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়সহ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।

সবশেষ গুচ্ছ পদ্ধতির আওতাভুক্ত ২০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদনের সময় শেষ হলেও আরেক দফার সময় বাড়ানো হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়টি নিশ্চিত করে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রম সম্পূর্ণ করা হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ১ এপ্রিল দেশের ২০টি সাধারণ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ পদ্ধতিতে স্নাতক শ্রেণিতে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার প্রাথমিক আবেদন শুরু হয়। ১৫ এপ্রিল আবেদন শেষ হয়। এ সময় প্রায় ৩ লাখ ২৪ হাজার আবেদন জমা পড়ে। তার মধ্যে ‘এ’ ইউনিট বিজ্ঞান বিভাগে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৫৩৮টি, ‘বি’ ইউনিট বাণিজ্য বিভাগে ৯১ হাজার ৫৩৫টি এবং ‘সি’ ইউনিটে মানবিকে ৪৬ হাজার ৭৩১টি আবেদন এসেছে।

তবে লকডাউন বাড়ায় শিক্ষার্থীদের আবেদনের সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছ কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষাবিষয়ক টেকনিক্যাল সাব-কমিটির আহ্বায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুনাজ আহমেদ নূর বলেন, গুচ্ছ ভর্তির আবেদন ১৫ এপ্রিল শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তা বাড়ানো হয়েছে। করোনার কারণে সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য আবেদন কমেছে। তাই সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এছাড়া পরিস্থিতি বিবেচনায় বিভাগভিত্তিক পয়েন্টও কমানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, গুচ্ছ ভর্তিতে মানবিকে ও বাণিজ্যে এসএসসি-এইচএসসি মিলে মোট ৭ পয়েন্ট চাওয়া হলেও দুই বিভাগ থেকে পয়েন্ট কমিয়ে ৬ করা হয়েছে। ফলে দুই পরীক্ষায় ৬ পয়েন্ট থাকলে তারা আবেদনের জন্য যোগ্য হবেন। তবে ৬ পয়েন্টধারীরা কবে থেকে আবেদন করতে পারবেন, সেটা দ্রুত সময়ের মধ্যে জানিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া ভর্তি পরীক্ষার ক্ষেত্রেও শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য সুরক্ষার প্রতি গুরুত্ব দেয়া হবে। এদিকে কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবেদন প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে।

এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ২১ মে শুরু হবে বলে নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে করোনার প্রকোপ বাড়ায় সেটি পেছাতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ঢাবি বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ আব্দুল মঈন বলেন, পরীক্ষার এখনো একমাস বাকি আছে। বিষয়টি নিয়ে এখনো ডিনস কমিটিতে আলোচনা হয়নি। তবে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পরিস্থিতি যদি স্বাভাবিক না হয়, তাহলে পরীক্ষা পেছাতে পারে।

তবে আমরা পরীক্ষার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে রাখছি। ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতি যদি এমনই থাকে তাহলে একাডেমিক কাউন্সিল বিষয়টি নিয়ে ভাববে। আমরা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কোনো অবস্থাতেই শিক্ষার্থীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হবে না।

কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষার কার্যক্রম চূড়ান্ত: কৃষি বিজ্ঞান বিষয়ে ডিগ্রি প্রদানকারী সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ পদ্ধতিতে ১ম বর্ষ স্নাতক শ্রেণীতে ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষার সব প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর ও কেন্দ্রীয় ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. গিয়াসউদ্দীন মিয়ার সভাপতিত্বে ভর্তি কমিটির অনলাইন সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক ২ মে থেকে ভর্তির আবেদন গ্রহণ শুরু হয়ে ১০ জুন শেষ হবে। এমসিকিউ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা আগামী ৩১ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

ফলাফল প্রকাশ হবে আগামী ৫ আগস্ট। ভর্তির আবেদনের তারিখসহ ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জাতীয় দৈনিক পত্রিকা ও বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ওয়েবসাইটে িি.িনংসৎধঁ.বফঁ.নফ পাওয়া যাবে। সভায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রশীদ ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. মতিয়ার রহমান হাওলাদার, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো. শহীদুর রহমান খান ও পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. স্বদেশ চন্দ্র সামন্ত যুক্ত ছিলেন।

এছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ম্যানেজমেন্ট বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ জামিনুর রহমান, বশেমুরকৃবির রেজিস্ট্রার মো. সিরাজুল ইসলাম তালুকদার, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি বিশেষজ্ঞ, প্রফেসর ড. মো. আলী আশরাফ, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ম্যাথমেটিক্স বিভাগের প্রফেসর মো. মুস্তাগিজ বিল্লাহ, শেরো বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের প্রফেসর এ. এম. এম শামসুজ্জামান ও বশেমুরকৃবির আইটি বিশেষজ্ঞ মুহাম্মদ আকরাম হোসেন প্রমুখ যুক্ত ছিলেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris