শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! বাগমারায় এক স্কুলের সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এলাকাছাড়া! বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল জাতীয় চার নেতা কখনো মৃত্যু ভয় করেননি : লিটন প্রেমিককে কুপিয়ে জখম করল প্রেমিকা! গোদাগাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ২ আসামি গ্রেপ্তার এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের সরে দাঁড়াতে নির্দেশ সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তিন প্রতারক রাজশাহীতে গ্রেফতার পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করে লাশ গুম করেছিলেন পুত্রবধূ! রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনে ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা

খেলাপি হয়েও বিপুল পরিমাণ ঋণের টাকার আবেদন গ্রাহকের, তোলপাড়!

Paris
Update : বুধবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২১

স্টাফ রিপোর্টার : ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে বিভিন্ন এ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৫ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে পরিশোধ না করার পরেও আবার বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণের আবেদন করেছেন এক গ্রাহক। এ নিয়ে ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অন্য গ্রাহকদের মধ্যে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ঋণ নেওয়ার পর ৪ বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো সেই ঋণ পরিশোধ করেননি ইসলামী ব্যাংক চাঁপাইনাবাবগঞ্জ শাখার গ্রাহক শামিউল আলম মানিক। আর সেই টাকা পরিশোধ না করেই আবার নতুন করে বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ নেওয়ার আবেদন করেছেন। সেই আবেদনের ফাইলটি শাখা ও জোনাল অফিসের প্রক্রিয়া শেষ করে প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পূর্বে যে জমি মর্গেজ রেখে তিনি ঋণ নিয়েছিলেন আবার সেই জমি মর্গেজ রেখেই ঋণের জন্য আবেদন করা হয়েছে। সেই টাকা দেয়ার জন্য বিভিন্নভাবে তদবির করছেন বলেও একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে ও অভিযোগের ভিত্তিতে জানা গেছে, ২০১৬ সালে শামিউল আলম মানিক নামের এক গ্রাহক ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা থেকে কয়েক মাস সময়ের ব্যবধানে নামে-বেনামে ১৫ কোটি টাকা উঠিয়ে নেন। টাকা ঋণ নেয়ার সময় তিনি তার সম্পত্তি মর্গেজ রাখেন। সেই সম্পত্তির মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা হতে পারে। কিন্ত তিনি ঋণ নেন ১৫ কোটি টাকা। সেই টাকা নেওয়ার পর তিনি আর ব্যাংকে টাকা ফেরত দেননি। সেই টাকার মুনাফা বেড়ে বর্তমানে প্রায় ১৮ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ব্যাংক থেকে ঋণ নেয়া টাকায় রাজশাহী মহানগরীতে একটি বাড়ি কেনেন। কিছুদিন আগে তিনি সেই বাড়ি বিক্রি করেন।

ব্যাংকের তৎকালীন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক বাড়ি বিক্রি করা টাকা থেকে কিছু ঋণ শোধ করার জন্য অনুরোধ করলেও সেটি তিনি করেননি। তারপরও প্রভাব খাটিয়ে তিনি গত মার্চ মাসে ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায় বিপুল পরিমাণ টাকার জন্য আবেদন করেন। আবেদনে তিনি তার প্রায় ৩৯ বিঘা জমি মর্গেজের কথা উল্লেখ করেন। কিন্ত এর পূর্বেও তিনি একই জমি মর্গেজ রেখে ব্যাংক ঋণ নিয়েছিলেন। নাম না প্রকাশ করার শর্তে এক ব্যাংক কর্মকর্তা বলেন, তিনি এখন কয়েক কোটি টাকার জন্য আবেদন করেছেন। যা মর্গেজ রাখা জমির তুলনায় অনেক বেশি টাকা। জমির ভেল্যুয়েশনেও যোগসাজোসের অভিযোগ তোলেন তিনি।

নিরাপত্তার স্বার্থে নাম না প্রকাশ করার শর্তে একই শাখার এক গ্রাহক অভিযোগ করে বলেন, গ্রাহক মানিক মর্গেজের তুলনায় অনেক বেশি টাকা ঋণ উঠানোয় তৎকালীন সেই শাখার ব্যবস্থাপককে সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে। এ নিয়ে তিনি দুটি অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখায়। আর সেই সময়ের বিনিয়োগ শাখার প্রধান খান এম এ রউফকে শোকজ করা হয়। তিনি সে সময় ব্যবস্থাপকের উপর দোষ চাপিয়ে দিয়ে বেঁচে যান। ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার তৎকালীন ব্যবস্থাপক সাইফুল হকের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

তবে তৎকালীন বিনিয়োগ শাখার প্রধান ও বর্তমানে বানেশ্বর শাখায় কর্মরত খান এম এ রউফ বলেন, গ্রাহককে ঋণ দেয়ার সময় তদন্ত করে ও তার মর্গেজ জমির বাজার মূল্য যাচাই করেই দেয়া হয়। এক জমির উপর বার বার ঋণ নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। গ্রাহককে কোনো কর্মকর্তাই একাই চাইলে ঋণ দিতে পারে না। মানিককে বিপুল পরিমাণ টাকা ঋণ দেয়ার ক্ষেত্রে তার যোগসাজোস আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি অস্বীকার করে বলেন, না এমন কিছু হয়নি।

এ বিষয়ে ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক এ এফ আর আনিসুর রহমান বলেন, মোবাইল ফোনে তথ্য দেয়া সম্ভব নয়। আবেদন করলে প্রয়োজন অনুযায়ী তথ্য দেয়া হবে। ইসলামী ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার বিনিয়োগ শাখার প্রধান ওমর আলী বলেন, আবেদন হয়েছে। তবে সেটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। যে কেউ ঋণ চাইতে পারে। ব্যাংকের চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক অপারেশন বলেন, বিষয়টি ব্যবস্থাপক স্যার ভালো বলতে পারবেন।

ইসলামী ব্যাংকের রাজশাহী জোনাল অফিসের এসভিপি শাজাহান আলী বলেন, আবেদন করার অধিকার সব গ্রাহকের আছে। তার ঋণ এখনো মঞ্জুর হয়নি। তিনি ব্যাংকের ঋণ খেলাপি গ্রাহক। সামিউল আলম মানিকের সাথে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ করেননি। রাজশাহী জোনাল অফিসের প্রধান মিজানুর রহমান মিজি এর সাথে তার দপ্তরে গিয়ে ও মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris