বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

এখনো লাইসেন্স পায়নি নগদ

Paris
Update : মঙ্গলবার, ১৩ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : বাংলাদেশে ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে কার্যক্রম চালাচ্ছে আর্থিক মোবাইল সেবাদানকারী (এমএফএস) নগদ। কিন্তু এখনো প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পায়নি। মূলত মালিকানা সংক্রান্ত জটিলতার কারণে নগদ লাইসেন্স পাচ্ছে না। ফলে ঝুঁকিতে রয়েছে নগদের রেজিস্ট্রিকৃত ৩ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহক। নগদ লিমিটেডে ডাক বিভাগের ৫১ শতাংশ শেয়ার মালিকানার বিষয়টি নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে আইনি জটিলতাও বাড়ছে। ডাক অধিদফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লিমিটেডের অধীনে বিগত ২০১৯ সালের ২৬ মার্চ নগদ যাত্রা শুরু করে। প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মালিকানা উল্লেখ করে নিজেদের রাষ্ট্রচালিত আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রচার করলেও, প্রকৃতপক্ষে এর কোন সরকারি অংশীদারি নেই। সিগমা গ্রুপেরই নগদের অধিকাংশ বিনিয়োগ। আর বাংলাদেশ ডাক বিভাগের সঙ্গে এমএফএস চুক্তির মাধ্যমে সিগমা গ্রুপ সেবা দিচ্ছে।

কিন্তু এটাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে লাইসেন্স পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নয়। নগদের লোগোতে বলা হয়েছে, এটি ‘ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন’। সেক্ষেত্রে দাবি করা হয়, সেবাটি ২০১০ সালের সংশোধিত ডাক আইনের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। নগদ বর্তমানে অর্থের লেনদেনের পাশাপাশি পেমেন্টের দায়িত্বও পালন করছে। এ নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয় আপত্তি তুলেছে। আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মতে, ডাক বিভাগ অর্থ লেনদেন করতে পারলেও কোনভাবেই পেমেন্টের দায়িত্ব পালন করতে পারে না।

সূত্র জানায়, নগদের কার্যক্রম চালাতে হলে ডাক বিভাগের একটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠন করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা ছিল। আর ওই কোম্পানির ৫১ শতাংশ শেয়ার ডাক বিভাগের হাতে থাকতে হবে। কিন্তুডাক বিভাগ দুই বছরেও সাবসিডিয়ারি কোম্পানি তৈরি করতে পারেনি। আবার ডাক আইন অনুযায়ী ডাক বিভাগের সাবসিডিয়ারি কোম্পানি গঠনেরও সুযোগ নেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের এমএফএস নীতিমালা অনুযায়ী, লাইসেন্স পেতে হলে নগদের ন্যূনতম ৫১ শতাংশ অংশীদারি মালিকানা বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অধীনে থাকতে হবে।

মালিকানায় অংশীদারির বিষয়টি অমীমাংসিত থাকাতেই প্রতিষ্ঠানটি গত দুই বছরে লাইসেন্সের জন্য আবেদন পর্যন্ত করতে পারেনি। তবে গত বছরের মার্চে আর্থিক সেবাদান কার্যক্রম পরিচালনা করতে ডাক বিভাগের অনুরোধে বাংলাদেশ ব্যাংক সাময়িকভাবে ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ জারি করে। তার আগে ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে নগদের লাইসেন্সের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন জানানো হয়েছিল। তা নিয়ে ২০২০ সালের ১৫ মার্চ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস বিভাগ থেকে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে চিঠি দিয়ে ৬ মাসের জন্য নগদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয়া হয়।

তবে চিঠিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ৭টি শর্তও জুড়ে দিয়েছিল। গত বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর ওই অনুমোদনের মেয়াদ শেষ হয়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইসেন্সের শর্ত পূরণ করতে পারেনি ডাক বিভাগ। তবে ডাক বিভাগেরর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরো ৬ মাস সময় দিয়েছে। ওই হিসেবে নগদের কার্যক্রম চালানোর অনুমোদনপত্রের মেয়াদ মাচেই শেষ হয়েছে। সূত্র আরো জানায়, দৈনিক গড়ে ৪০০ কোটি টাকা লেনদেনের মাধ্যমে নগদ বর্তমানে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান।

নগদের গ্রাহক সংখ্যা এবং বাজারে শেয়ার দ্রুত বাড়লেও প্রতিষ্ঠানটির লেনদেন এখনো নিয়ন্ত্রণাধীন নয়। ফলে গ্রাহকদের জন্য বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ। মাত্র ২ বছরেই এখন নগদের দখলে মোবাইল সেবাদানের বাজারের ৩০ শতাংশের বেশি। আর বাংলাদেশ ব্যাংকের নজরদারি না থাকায় প্রতিষ্ঠানটি এমএফএস নীতিমালার আওতাধীন কিনা তা কেউ জানে না। ফলে নগদ দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ডিজিটাল অর্থ লেনদেনের মাধ্যম হলেও লাইসেন্স না থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংকের মোট মোবাইল আর্থিক সেবার পরিসংখ্যানে প্রতিষ্ঠানটির লেনদেনের তথ্য নেই।

নগদ ছাড়াই বর্তমানে বাজারে ১৫টি আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্যমতে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণ এক হাজার ৯৬৬ কোটি টাকা। এদিকে সম্প্রতি রাজধানীর এক হোটেলে নগদের মালিকানার বিষয় ব্যাখ্যা করে নগদের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ মিশুক সাংবাদিকদের জানান, সরকার নগদের ৫১ শতাংশ শেয়ার নেবে। সেজন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তা আইন মন্ত্রণালয়ে যাচাই বাছাইয়ের অপেক্ষায় আছে। সব প্রক্রিয়া শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন পাবে নগদ।

অন্যদিকে নগদের মালিকানা সঙ্কটের বিষয়ে ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজ উদ্দীন জানান, থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিসের সঙ্গে কোম্পানি গঠনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। কিছু বিষয় নিয়ে সমাধানে আসতে দু’পক্ষের আরো দুই বা তিন দফায় আলোচনায় বসতে হবে। তারপর মূল্যায়নের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের নিকট আবেদনপত্র পাঠানো হবে। ডাক বিভাগ প্রতিষ্ঠানটির ৫১ শতাংশ মালিকানা পেলেও কোনো বিনিয়োগ করবে না।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মোহাঃ হুমায়ুন কবির জানান, যেসব শর্ত দেয়া হয়েছে সেগুলো পরিপালন করে এলে নগদকে লাইসেন্স দেয়া হবে। কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেয়া সাময়িক সময়সীমা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। আর নতুন সময়সীমা আগামী জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris