শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! বাগমারায় এক স্কুলের সভাপতি ও সহকারী প্রধান শিক্ষক এলাকাছাড়া! বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অবিচল জাতীয় চার নেতা কখনো মৃত্যু ভয় করেননি : লিটন প্রেমিককে কুপিয়ে জখম করল প্রেমিকা! গোদাগাড়ীতে দু’পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় আরো ২ আসামি গ্রেপ্তার এমপি-মন্ত্রীর স্বজনদের সরে দাঁড়াতে নির্দেশ সেনাবাহিনীতে ভুয়া নিয়োগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়া তিন প্রতারক রাজশাহীতে গ্রেফতার পুঠিয়ায় শাশুড়িকে হত্যা করে লাশ গুম করেছিলেন পুত্রবধূ! রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে আরডিএ’র জায়গা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ! সারাদেশে উপজেলা নির্বাচনে ‘হস্তক্ষেপ’ নিয়ে চিন্তিত প্রার্থীরা

বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক উদারতার পরিচয় দিয়েছে: জন কেরি

Paris
Update : শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি বলেছেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক উদারতার পরিচয় দিয়েছে। বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, আপনারা তাদের একটি দ্বীপ (ভাসানচর) দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। রোহিঙ্গাদের সঙ্গে যা হয়েছে এবং এখন মিয়ানমারের জনগণের সঙ্গে যা হচ্ছে, সেটি বর্তমান সময়ের একটি বড় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কেরি বলেন, আপনারা তাদের একটি দ্বীপ (ভাসানচর) দিয়েছেন। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশ কাজ করছে।

কিন্তু এটি দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নয়। এটি তাদের সমস্যা সমাধান করবে না। জন কেরি আরও বলেন, নতুন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন এ বিষয়ে নজর রাখছেন। তিনি এবং মার্কিন প্রশাসন মিয়ানমারে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য সবকিছু করবেন। এর ফলে রোহিঙ্গাদের ওপর যে চাপ ও চ্যালেঞ্জ আছে, সেটি কিছুটা কমবে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এগিয়ে আসা উচিত। কারণ, এটি বাংলাদেশের একার বোঝা নয়। যুক্তরাষ্ট্র অনেক চেষ্টা করেছে যাতে করে মিয়ানমার সঠিক পথে অগ্রসর হয়।

আমাদের আশা অনেক বেশি ছিল বলেও তিনি জানান। জন কেরি বলেন, আমি অং সান সুচির সঙ্গে নিজে দেখা করেছি, যাতে সামনের দিকে অগ্রসর হওয়া যায়। আমি মিয়ানমারে গিয়েছি এবং সেখানকার জেনারেলদের সঙ্গে দেখা করেছি। দায়বদ্ধতার বিষয়ে বলেছি। কিন্তু তারা এটিকে সম্মান দেয়নি।
এদিকে জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতি মোকাবিলার জন্য প্রতিবছর ১০০ কোটি ডলার তহবিলে অর্থায়ন করার কথা উন্নত বিশ্বের। কিন্তু এ বিষয়ে অগ্রগতি খুবই কম। মার্কিন প্রেসিডেন্টের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরিকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জন কেরি সব জায়গায় সফল হয়েছেন।

আমি আশা করি, প্রতি বছর ১০০ কোটি ডলার তহবিল সংগ্রহের কাজটি তিনি করতে পারবেন। মোমেন বলেন, এই অর্থের ৫০ শতাংশ অভিযোজন (অ্যাডাপটেশন) এবং ৫০ শতাংশ প্রশমন (মিটিগেশন)-এর জন্য ব্যয় করতে হবে। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে এবং এ বিষয়ে আমরা কেরিকে জানিয়েছি। এ ছাড়া গ্লাসগোতে কপ-২৬-এ বাংলাদেশ একটি উচ্চ পর্যায়ের সাই ইভেন্ট করতে চায়। এজন্য আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চেয়েছি। মন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা কক্সবাজারের বনায়ন ধ্বংস করছে। তাদের টেকসই প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে এর সমাধানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা দরকার বলে কেরিকে জানিয়েছি।

জলবায়ু পরিবর্তন জনিত ক্ষতি মোকাবিলায় অর্থ ও প্রযুক্তি প্রয়োজন এবং বাংলাদেশ আশা করে, যুক্তরাষ্ট্র সেটি জোগান দেবে বলে তিনি জানান। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে জন কেরি বলেন, জো বাইডেনের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র আবারও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে ফেরত এসেছে। তিনি বলেন, আমি দুঃখিত যে আগের মার্কিন রাষ্ট্রপতি জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত প্যারিস চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিলেন, কিন্তু আমরা আবারও ফেরত এসেছি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য সব দেশকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করতে হবে। কারণ, এটি একক কোনও দেশের পক্ষে সম্ভব নয়।

এর জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ মাসে শীর্ষ সম্মেলন আহ্বান করেছেন বলে তিনি জানান। কেরি বলেন, এই সম্মেলনে ধনী ও বড় দেশগুলোর পাশাপাশি ভঙ্গুর দেশগুলোরও সুযোগ থাকবে তাদের কথা বলার এবং আমরা তাদের কথা শুনবো। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সমস্যার সমাধান হলে কারও কোনও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে না বরং উপকার হবে। অর্থনীতিতে আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার সকালে জন কেরি ঢাকায় এলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন তাকে অভ্যর্থনা জানান। সন্ধ্যা ৬টার দিকে তিনি ঢাকা ছাড়েন। সন্ধ্যায় বিমানবন্দরে জন কেরিকে বিদায় জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। ঢাকা ছাড়ার আগে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য বৈঠক করেন তিনি।

এ সময় ক্লাইমেট লিডার্স সামিটে অংশ নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেন জন কেরি। ঢাকা সফরকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু বিষয়ক বিশেষ দূত পররাষ্ট্র মন্ত্রী জন কেরি। বৈঠক শেষে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন তিনি। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পরিবেশ মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন, ভালনারেবল ফোরাম প্রেসিডেন্সির বিশেষ দূত আবুল কালাম আজাদ, সংসদ সদস্য সাবের হোসেন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি।

গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টায় দিল্লি থেকে বিশেষ প্লেনে জন কেরি ঢাকায় আসেন। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও তার স্ত্রী সেলিনা মোমেন। এ সময় ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার উপস্থিত ছিলেন। আগামী ২২-২৩ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রে ৪০টি দেশের রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানের অংশগ্রহণে ভার্চ্যুয়াল মাধ্যমে ক্লাইমেট লিডার্স সামিটের আয়োজন করা হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সশরীরে আমন্ত্রণপত্র নিয়ে আসেন জন কেরি।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris