বৃহস্পতিবার

২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীতে গ্রীন প্লাজা’র ৫ম প্রকল্পের ‘গ্রীন ছায়েরা মঞ্জিল’ এর শুভ উদ্বোধন মাঠ পর্যায়ের তথ্য সংগ্রহের জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার

করোনার প্রভাবে ব্যাহত হচ্ছে চলতি বাজেটের অর্থ ব্যয়ের স্বাভাবিক গতি

Paris
Update : বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১

এফএনএস : করোনার প্রভাবে চলতি বাজেটের অর্থ ব্যয়ের স্বাভাবিক গতি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে শতভাব বাজেট বাস্তবায়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এডিপিতে অর্থ ব্যয় কমায় উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব। একইভাবে পরিচালনা খাতেও ব্যয় কমছে। গত জুলাই-নভেম্বর ৫ মাসে বাজেট থেকে মাত্র ১ লাখ ১৫ হাজার ১৫৪ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে জুনের মধ্যে ৪ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হবে। ওই হিসাবে প্রতি মাসে অর্থ ব্যয়ের আকার হবে ৬৪ হাজার ৬৯২ কোটি টাকা। বিশেষজ্ঞদের মতে, সক্ষমতার বিবেচনায় তা অসম্ভব। অর্থ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সরকারের অর্থমন্ত্রী জাতীয় সংসদে চলতি অর্থবছরে ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করে। যদিও এবার বাজেট ঘোষণাকালীন সময়ে করোনার প্রাদুর্ভাব ছিল। ফলে শতভাগ বাজেট বাস্তবায়ন নিয়ে এক ধরনের আশঙ্কা রয়েই গেছে। অর্থবছরের জুলাই থেকে নভেম্বর ওই ৫ মাসে বাজেট বাস্তবায়ন অগ্রগতি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বড় দুটি খাতে অর্থ ব্যয় হয়। প্রথমটি সরকারের পরিচালনা খাত এবং দ্বিতীয় হচ্ছে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি)। এ বছর সরকারের পরিচালনা খাতে ব্যয় ধরা হয় ৩ লাখ ৪৮ হাজার ১৮০ কোটি টাকা। তবে জুলাই থেকে নভেম্বর ওই ৫ মাসে ব্যয় হয়েছে মাত্র ৮৮ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।

যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ। সরকারের পরিচালনা খাতের মোট ব্যয় ৫টি সাব খাতের মাধ্যমে করা হয়। তার মধ্যে একটি হচ্ছে প্রশাসনিক খাত। যেখানে ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১ লাখ ৫৮ হাজার ৪২২ কোটি টাকা। প্রশাসনিক খাতে মূলত সরকারি চাকরিজীবী, ডিফেন্স এবং পাবলিক অর্ডার অ্যান্ড সেফটি রয়েছে। ওই খাতে জুলাই-নভেম্বর ব্যয় হয়েছে ৩২ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ৩৭ দশমিক ৩ শতাংশ। আর ব্যয়ের দ্বিতীয় খাত হচ্ছে সামাজিক অবকাঠামো। ওই খাতের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, বাসস্থান, সামাজিক নিরাপত্তা, স্থানীয় সরকার বিভাগ। চলতি অর্থবছরে ওই খাতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৩ হাজার ৩১২ কোটি টাকা।

তার মধ্যে ৫ মাসে ব্যয় হয়েছে ২৫ হাজার ৯০৬ কোটি টাকা। যা মোট লক্ষ্যমাত্রার ২৯ দশমিক ৩ শতাংশ। তাছাড়া ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার খাতে বরাদ্দ আছে ১০ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকা। ফিজিক্যাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার খাতে রয়েছে জ¦ালানি, পরিবহণ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা। গত ৫ মাসে ওই খাতে ব্যয় হয় ১ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা হয়েছে। কৃষি খাতে ১৮ হাজার ১০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলেও অর্থবছরের প্রথম ৫ মাসে ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৮৯২ কোটি টাকা। ওই খাতে মোট ব্যয় লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৩ দশমিক ২ শতাংশ। আর ওই ৫ মাসে সুদ খাতে ২ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা ও অন্যান্য খাতে ব্যয় হয়েছে ১ হাজার ১৪৯ কোটি টাকা।

সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে উন্নয়ন খাতে ২ লাখ ১৫ হাজার ৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। কিন্তু করোনার কারণে উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ব্যাহত হয়েছে। অনেক নিম্নমানের প্রকল্পের অর্থ ব্যয় স্থগিত করা হয়। যদিও ৩ মাস পর সেগুলোতে অর্থায়ন শুরু করা হয়। তাছাড়া এখন পর্যন্ত প্রকল্পের মোট ব্যয়ের ২৫ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওসব কারণে উন্নয়ন ব্যয়ের গতি ধীর হচ্ছে। জুলাই থেকে নভেম্বর ওই ৫ মাসে উন্নয়ন খাতে ব্যয় হয়েছে ২৬ হাজার ৭৫৩ কোটি টাকা। যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ১২ দশমিক ৪৪ শতাংশ। তবে গত বছরের একই সময়ে ওই অর্থের ব্যয়ের হার ছিল ১৭ দশমিক ১৬ শতাংশ। করোনায় উন্নয়ন খাতে ব্যয় করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় রয়েছে জাতীয় সংসদ, পাবলিক সার্ভিস কমিশন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্নীতি দমন কমিশন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, রেল মন্ত্রণালয়। ওসব মন্ত্রণালয় ও বিভাগ বরাদ্দের টাকা এখনো ব্যয় করতে পারেনি।

এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদরা জানান, অর্থবছরের শুরুতে বাজেটের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় তার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো সম্পর্ক থাকে না। প্রতি বছরই একটি উচ্চাভিলাষী বাজেট ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ ও ব্যয় বাস্তবায়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয় না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের হিসাবে যে টাকা খরচ করা হয়েছে বাকি অর্থ নির্ধারিত সময়ে ব্যয় সম্ভব হবে না। তবে এখন রাজস্ব আহরণ বাড়ানোর চেষ্টা করা জরুরি। কারণ কর আহরণ জিডিপির অনুপাতের তুলনা করলে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিম্ন বাংলাদেশ। অন্যদিকে এ প্রসঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানান, করোনার কারণে বাজেট বাস্তবায়নে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়। পাশাপাশি অর্থ ব্যয়ের জন্য প্রয়োজন রাজস্ব। কিন্তু ব্যবসা বাণিজ্য ও অর্থনীতির গতি ফিরে না আসায় রাজস্ব আদায় ঠিকমতো হচ্ছে না। ফলে সবদিক বিবেচনা করেই অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris