শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেশে একদিনে আরো ৫০৪২ রোগী শনাক্ত, মোট মৃত্যু ৯ হাজার ছুঁইছুঁই

Paris
Update : বুধবার, ৩১ মার্চ, ২০২১

এফএনএস : দেশে টানা দ্বিতীয় দিনের মত পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মোট মৃত্যু পৌঁছে গেছে নয় হাজারের কাছাকাছি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে ৫ হাজার ৪২ জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে; মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৫ জনের। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে এ পর্যন্ত শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৬ লাখ ৫ হাজার ৯৩৭ জনে। আর গত এক দিনে মারা যাওয়া ৪৫ জনকে নিয়ে দেশে করোনাভাইরাসে মোট ৮ হাজার ৯৯৪ জনের মৃত্যু হল।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে বাসা ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও ২ হাজার ১৬২ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন গত এক দিনে। তাতে এ পর্যন্ত সুস্থ রোগীর মোট সংখ্যা বেড়ে ৫ লাখ ৪০ হাজার ১৮০ জন হয়েছে। বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ার এক বছর পর সোমবার প্রথমবারের মত এক দিনে পাঁচ হাজারের বেশি নতুন রোগী শনাক্তের খবর আসে। আর এর মধ্য দিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ছয় লাখ ছাড়িয়ে যায়।

এর আগে গত বছরের ২ জুলাই মোট ৪ হাজার ১৯ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল, সোমবারের আগে সেটাই ছিল এক দিনে শনাক্ত রোগীর সর্বোচ্চ সংখ্যা। গত বছরের ৩০ নভেম্বরের পর থেকে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি পর্যন্ত দেশে সংক্রমণের হার ধারাবাহিকভাবে কমছিল। কিন্তু মার্চের শুরু থেকে দৈনিক শনাক্ত রোগী, মৃত্যুর সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকে। দেশে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৫ লাখ থেকে সাড়ে ৫ লাখ হতে যেখানে ৭৭ দিন সময় লেগেছিল, তা ছয় লাখে পৌঁছাতে সময় নিয়েছে মাত্র ২২ দিন।

গত দুদিন ধরে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা পাঁচ হাজারের উপরে থাকার পাশাপাশি ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হারও থাকছে ১৮ শতাংশের বেশি, যা গত ২৪ অগাস্টের পর সর্বোচ্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ দেশে করোনাভাইরাসে প্রথম মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ১১ মার্চ তা সাড়ে আট হাজার ছাড়িয়ে যায়। এর মধ্যে গত বছরের ৩০ জুন এক দিনেই ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়, যা এক দিনের সর্বোচ্চ মৃত্যু। বিশ্বে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা ইতোমধ্যে ১২ কোটি ৭৬ লাখ পেরিয়েছে, মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ২৭ লাখ ৯২ হাজার।

জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ, আর মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৪০তম অবস্থানে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে মোট ২২৪টি ল্যাবে ২৬ হাজার ৬২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪৬ লাখ ৪৩ হাজার ৬৪৫টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৮ দশমিক ৯৪ শতাংশ, এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ০৫ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৯ দশমিক ১৫ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সরকারি ব্যবস্থাপনায় এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৫ লাখ ১৭ হাজার ১১৩টি। আর বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হয়েছে ১১ লাখ ২৬ হাজার ৬৩২টি।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ আর নারী ১৭ জন। তাদের প্রত্যেকেই হাসপাতালে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ২৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ৮ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরে মধ্যে, ৭ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ২ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে এবং ১ জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল। মৃতদের মধ্যে ৩৭ জন ঢাকা বিভাগের, ৩ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ২ জন রাজশাহী বিভাগের,২ জন খুলনা বিভাগের এবং ১ জন সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন। দেশে এ পর্যন্ত মারা যাওয়া ৮ হাজার ৯৯৪ জনের মধ্যে ৬ হাজার ৭৭৪ জনই পুরুষ এবং ২ হাজার ২২০ জন নারী।

তাদের মধ্যে ৫ হাজার ৩০ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। এ ছাড়া ২ হাজার ২২৭ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, ১ হাজার ১১ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, ৪৪৪ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে, ১৭৭ জনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে, ৬৭ জনের বয়স ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এবং ৩৮ জনের বয়স ছিল ১০ বছরের কম। মৃতদের মধ্যে ৫ হাজার ১১৮ জন ঢাকা বিভাগের, ১ হাজার ৬৩১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫০১ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫৭৯ জন খুলনা বিভাগের, ২৭৩ জন বরিশাল বিভাগের, ৩১৮ জন সিলেট বিভাগের, ৩৭৩ জন রংপুর বিভাগের এবং ২০১ জন ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris