বুধবার

২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১১ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
থাইল্যান্ডে শেখ হাসিনা লাল গালিচা সংবর্ধনা সাবধান! রাজশাহীতে নকল ফ্লেভার্ড ড্রিংকস-আইস ললি রাজশাহীতে জোরপূর্বক একাধিক ফ্ল্যাট দখলের অভিযোগ এক পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ-কাতার ১০ চুক্তি সই গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক ব্যবসায়ি এজাজুল হক ঝাবু গ্রেফতার রাজশাহীতে বৃষ্টির জন্য কোথাও ইসতিসকার নামাজ আদায় আবার কোথাও ব্যাঙের বিয়ে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী

স্বাস্থ্যখাতে ১৫ হাজার কোটি বরাদ্দ গুরুত্ব পেয়েছে দারিদ্র্য বিমোচনও

Paris
Update : বুধবার, ৩ মার্চ, ২০২১

এফএনএস : দারিদ্র্য বিমোচনের সঙ্গে সরাসরি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পসমূহের অগ্রাধিকার বিবেচনায় রেখে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাজেট চূড়ান্ত করেছে পরিকল্পনা কমিশন। সংশোধিত এডিপিতে স্বাস্থ্য, পুষ্টি, জনসংখ্যা ও পরিবার কল্যাণখাতে ১৪ হাজার ৯২১ কোটি ৮৮ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে যা মূল এডিপির ৭ দশমিক ৫৫ শতাংশ। মূলত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতকে এবারের সংশোধিত এডিপিতে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় সংশোধিত এডিপির আকার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা।

এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসবে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থায়ন করা হবে ৬৩ হাজার কোটি টাকা। তবে, এডিপি আকার ছিল এডিপির আকার ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা ও বৈদেশিক সহায়তা থেকে ৭০ হাজার ৫০১ কোটি ৭২ লাখ টাকা খরচ ধরা হয়। তবে, সংশোধিত এডিপি বা চূড়ান্ত এডিপিতে বৈদেশিক সহায়তা খাতে কমছে সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকা। ফলে চূড়ান্ত উন্নয়ন বাজেট দাঁড়াচ্ছে ১ লাখ সাড়ে ৯৭ হাজার কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে পরিকল্পনা কমিশনে অনুষ্ঠিত এনইসির সভায় চূড়ান্ত উন্নয়ন বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। গণভবনের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এনইসি সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনা বিভাগের সচিব মোহাম্মদ জয়নুল বারী বলেন, কোভিডের কারণে স্বাস্থ্যখাত ও দারিদ্র বিমোচনকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ দেওয়ার ক্ষেত্রে কৃষি, কৃষিভিত্তিক শিল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন, আইসিটি শিক্ষার উন্নয়ন, দারিদ্র্য হ্রাসকরণ এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, বন্যা, অতিবৃষ্টি ইত্যাদির ক্ষয়ক্ষতি পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্রকল্পে অগ্রাধিকার বেশি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এবারের সংশোধিত এডিপির কিছু বৈশিষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে। এলাকা/অঞ্চলভিত্তিক সুষম উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত প্রকল্পসমূহে বরাদ্দ দেওয়া নিশ্চিত করা; চলতি অর্থবছরে সমাপ্তির জন্য নির্ধারিত প্রকল্পে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ নিশ্চিত করা; সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে/উদ্যোগে গৃহীত প্রকল্পের সহায়ক নতুন প্রকল্পকে অগ্রাধিকার দেওয়া এবং বেসরকারি উদ্যোগে বাস্তবায়ন করার সম্ভাবনা রয়েছে এমন প্রকল্প আরএডিপিতে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাব পরিহার করা। বৈদেশিক অর্থ ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিপূরক অভ্যন্তরীণ উৎস বরাদ্দের (গধঃপযরহম ঋঁহফ) প্রস্তাবকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া কৃষিখাতে ৭ হাজার ৭৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট এডিপির ৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগে ১৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট সংশোধিত এডিপির ৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া পানি সম্পদখাতে ৬ হাজার ৭০৯ কোটি ও শিল্পখাতে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ২০২১ সালে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে বিদ্যুৎখাতে ২১ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট এডিপি ১১ দশমিক ১০ শতাংশ। শ্রম ও কর্মসংস্থানখাতে ৫৩৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

দেশজ সম্পদ, বৈদেশিক অর্থায়ন, সামষ্টিক অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপি সংশোধন করা হয়েছে। এবার প্রথমবারের মতো অনলাইন পদ্ধতিতে সংশোধিত এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যা বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে আরেক ধাপ এগিয়ে গেলো। মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ চাহিদা, অর্থ বিভাগ থেকে প্রাপ্ত সম্পদ এবং সীমিত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের বিষয়টি আরএডিপি প্রণয়নে বিবেচনা করা হয়েছে। সংশোধিত এডিপিতে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ১১ হাজার ৬২৮ কোটি টাকা। ফলে সংশোধিত এডিপির মোট আকার ২ লাখ ৯ হাজার ২৭১ কোটি টাকা। সংশোধিত এডিপিতে মোট প্রকল্প ১ হাজার ৮৮৬টি।

এর মধ্যে স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার ১০১টি প্রকল্প রয়েছে। সংশোধিত এডিপিতে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রসার, অধিক কর্মসংস্থান, শিক্ষা-স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়ন, মহামারি কোভিড-১৯ পরিস্থিতি মোকাবিলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন, খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চয়তাকরণ করা হয়েছে। দারিদ্র বিমোচন ও দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। ১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

১০টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ১ লাখ ৫০ হাজার ২৮২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট সংশোধিত এডিপির সাড়ে ৭৬ শতাংশ। এরই ধারাবাহিকতায় স্থানীয় সরকার বিভাগে ৩৪ হাজার ১৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে যা মোট এডিপির ১৭ দশমিক ৪১ শতাংশ ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে ২৫ হাজার ৭৬১ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যা মোট এডিপির ১৩ দশমিক ১২ শতাংশ। বিদ্যুৎ বিভাগকে গুরুত্ব দিয়ে ২১ হাজার ৯৩৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া রেলপথ মন্ত্রণালয়ে ১১ হাজার ৯৮৮ কোটি ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে ১১ হাজার ৯৭৯ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে যা মোট সংশোধিত এডিপির ৬ দশমিক ১১ শতাংশ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে ১০ হাজার ৯০৩ কোটি ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে ১০ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগে ৯ হাজার ৬৮৫, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে ৭ হাজার ৩৬৪ ও গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ে ৫ হাজার ৮০৮ কোটি টাকা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris