এফএনএস : জনবল নিয়োগে জটিলতার মুখে পড়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। দুই বছরের বেশি সময় আগে রেলের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ১ হাজার ৬৮৪টি পদের বিপরীতে লিখিত পরীক্ষা নেয়া হয়। কিন্তু জনপ্রশাসন মন্ত্রণারয় ১৯৮৫ সালের রেলওয়ের নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করে। ফলে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের নির্ধারিত পদগুলোয় নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি রেলের অন্যান্য পদেও নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টির সমাধান হলে রেলওয়ে দ্রুতই জনবল নিয়োগ দেবে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলে ১৩টি ক্যাটাগরিতে ১ হাজার ৩২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছিল। ওই নিয়োগ প্রক্রিয়া ১৯৮৫ সালের রেল নিয়োগবিধির অধীনে চলমান ছিল। তবে ২০১৯ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ওই নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করে। ফলে নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। একইভাবে পশ্চিমাঞ্চলে ১২টি ক্যাটাগরিতে ৬৫২ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়াও আটকে যায়। গত বছরের নভেম্বরে রেলের নতুন নিয়োগবিধি প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়। তবে নতুন নিয়োগবিধিতে বিভিন্ন পদের বিপরীতে আবেদনের যোগ্যতা ও শর্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। সেক্ষেত্রে অষ্টম শ্রেণি পাসের পরিবর্তে ন্যূনতম যোগ্যতা এসএসসি রাখা হয়েছে। তাছাড়া কোটার হারও পরিবর্তন করা হয়েছে। তাতে জটিলতা দেখা দিয়েছে।

সূত্র জানায়, এখন থেকে রেলের নতুন পদে অনলাইনে আবেদন গ্রহণ করা হবে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল বা তৃতীয় কোনো পক্ষের মাধ্যমে আবেদনের ব্যবস্থা করা হবে। তারা যাচাই-বাছাই করে লিখিত পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করবে। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর রেলওয়ে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের ব্যবস্থা করবে। সেক্ষেত্রে রেলভবনে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি তথা স্ট্যান্ডিং কমিটি থাকবে। ওই কমিটি উত্তীর্ণ হওয়ার সংখ্যা অনুপাতে বিভাগ বা জেলা পর্যায়ে মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের জন্য উপ-কমিটি গঠন করে দেবে। সেক্ষেত্রে ১১টি বিভাগের জন্য ১১টি উপ-কমিটি গঠনের বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।

এদিকে এ প্রসঙ্গে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) সরদার শাহাদত আলী জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ১৯৮৫ সালের নিয়োগবিধি অবৈধ ঘোষণা করায় রেলওয়ে জনবল নিয়োগ করতে পারছে না। ফলে সংস্থাটি জনবল সংকটে আছে। তবে শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে। ওই লক্ষ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে নিয়োগ বিষয়ে একাধিকবার বৈঠকও করা হয়েছে। অন্যদিকে এ অবস্থায় করণীয় নির্ধারণে রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন সম্প্রতি অনুষ্ঠিত

রেলপথ মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে যেসব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বিধির শর্ত পুরনোটির সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়, সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন। তবে যেসব পদের বিপরীতে শর্ত পরিবর্তন করা হয়েছে, সেক্ষেত্রে আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন গ্রহণের পরামর্শ দেয়া হয়। বৈঠকে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে রেলওয়েকে লিখিত প্রস্তাব পাঠাতে অনুরোধ করেন। রেলপথ মন্ত্রণালয় থেকে প্রস্তাব পেলে তা বিবেচনার আশ্বাস দেয়া হয়। রেলের বিভিন্ন শূন্য পদেও নতুন করে নিয়োগের বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা করা হয়। সেক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশনা দেন রেলপথমন্ত্রী।