শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রথম দিন শেষে সমানে সমান বাংলাদেশ-ইন্ডিজ

Paris
Update : শুক্রবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১

এফএনএস : প্রথম সেশন ও দ্বিতীয় সেশনের চিত্র একই। এই দুই সেশনই বাংলাদেশের কেটেছে হতাশার, তুলতে পেরেছে একটি করে উইকেট। তবে মাঝের সেশনে অন্যরকম ইঙ্গিত দিয়েছিল মুমিনুল হকরা ৩ উইকেট তুলে নিয়ে। যদিও সেই ধারা ধরতে রাখতে পারেনি চা বিরতি পর। দিন শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেট হারিয়ে স্কোরে জমা করেছে ২২৩ রান। তাই ঢাকা টেস্টের প্রথম দিনে দুই দল সমানে সমান। প্রথম টেস্ট হারায় মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টটি বাংলাদেশের জন্য সিরিজ বাঁচানোর লড়াই। যদিও শুরুর দিনের পুরোটা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি স্বাগতিকরা। বিশেষ করে, শেষ সেশনে ক্যারিবিয়ানদের চেপে ধরতে ব্যর্থ হয়েছেন তাইজুল ইসলাম-আবু জায়েদ রাহীরা। তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে একপ্রান্ত আগলে রেখে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে টেনে নিয়ে গেছেন এনক্রুমা বনার।

চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের ভিত গড়ে দেওয়া এই ব্যাটসম্যান দিন শেষে অপরাজিত ৭৪ রানে। তার সঙ্গে দ্বিতীয় শুরু করবেন জোশুয়া দা সিলভা (২২*)। প্রথম টেস্টে একাদশের বাইরে থাকা রাহী সুযোগ পেয়েই নিজের সামর্থ্যরে প্রমাণ দিয়েছেন। ১৮ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট। পরীক্ষিত তাইজুলও ২ উইকেট পেয়েছেন ৬৪ রান খরচায়। আর সাদমান ইসলামের চোটে একাদশে জায়গা পাওয়া সৌম্য সরকার বল হাতে তুলে নিয়েছেন ১ উইকেট। চট্টগ্রাম টেস্ট যেখানে শেষ হয়েছিল, ঢাকা টেস্টের শুরুটাও কি সেখান থেকেই হলো? এমন শঙ্কাই তৈরি হয়েছিল দিনের শুরুতে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের ম্যাচের পঞ্চম দিনে বাংলাদেশের ওপর ছড়ি ঘুরিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ঢাকার টেস্টের প্রথম দিনের প্রথম সেশনেও ছিল ক্যারিবিয়ানদের দাপট।

ঢাকা টেস্টে দারুণ শুরুর প্রত্যাশা ছিল টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা বাংলাদেশের। কিন্তু তা হয়নি। প্রথম উইকেটের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ২১ ওভার। সাফল্য আসে তাইজুলের হাত ধরে। এই স্পিনারের বলে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন জন ক্যাম্পবেল। ফেরার আগে ৬৮ বলে ৫ বাউন্ডারি ও ১ ছক্কায় খেলে গেছেন ৩৬ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় সাফল্য অবশ্য লাঞ্চের পরপরই আসে রাহীর সৌজন্যে। সাম্প্রতিক সময়ে টেস্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল পেসার তিনি। তবুও তাকে বসিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টে এক পেসার নিয়ে সাজানো একাদশে নেওয়া হয়েছিল মোস্তাফিজুর রহমানকে। বাঁহাতি পেসার সুবিধা করতে না পারায় টিম ম্যানেজমেন্ট আবারও ফিরেছে পুরনো আস্থায়।

প্রায় একবছর পর লাল বলের ক্রিকেটে ফিরে রাহী প্রথমবার উইকেট উদযাপন করেন শেন মোসেলিকে ফিরিয়ে। তার বলে বোল্ড হওয়া ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান ৩৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে করেন ৭ রান। প্রথম সেশনের হতাশা ঝেরে কী চমৎকারভাবেই না লাঞ্চের পর ঘুরে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। এই সেশনে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি কাইল মায়ার্সের উইকেট। চট্টগ্রামে বাংলাদেশকে বড় লজ্জা দিয়েছেন এই ব্যাটসম্যান। ৩৯৫ রানের লক্ষ্য টপকে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয়ের রূপকার তো তিনিই। অভিষেক টেস্টে হার না মানা ২১০ রানের ইনিংস খেলে ক্যারিবিয়ানদের এনে দিয়েছিলেন অবিশ্বাস্য জয়। সেই মায়ার্স সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে আউট হয়েছেন মাত্র ৫ রান করে। বলতে গেলে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের প্রথম টেস্টে বাংলাদেশকে একাই হারিয়েছেন মায়ার্স। চতুর্থ দিনের শেষ বিকেলে ব্যাটিংয়ে নেমে পঞ্চম দিনের একেবারে শেষভাগে দুর্দান্ত ডাবলে জয় নিশ্চিত করেন ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যান।

স্বাভাবিকভাবেই ঢাকা টেস্টে তার ওপর ছিল বাড়তি নজর। যদিও এবার তাকে কিছুই করতে দেয়নি বাংলাদেশ, আরও স্পষ্ট করে বললে রাহী। দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে ফিরে দুর্দান্ত বোলিংয়ে ডানহাতি পেসার তুলে নিয়েছেন মায়ার্সের গুরুত্বপূর্ণ উইকেটটি। সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়ার আগে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ১৮ বলে ১ বাউন্ডারিতে করেন ৫ রান। মায়ার্সকে ফিরিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে চেপে ধরে বাংলাদেশ। এই রাহীর শিকার হয়েই ফিরেছেন শেন মোসেলি (৭)। খানিক পর উইকেট উদযাপনে যোগ দেন সৌম্য। এই অলরাউন্ডার তুলে নেন ক্রেগ ব্র্যাটওয়েটের উইকেট।

ফেরার আগে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক ১২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে করেন ৪৭ রান। দ্বিতীয় সেশনটা তাই বাংলাদেশের। এই সেশনে স্বাগতিকদের প্রাপ্তি ৩ উইকেট। চা বিরতির পর আবার প্রতিরোধ সফরকারীদের। তবে ভালো কিছুর আভাস পাওয়া গিয়েছিল জার্মেইন ব্ল্যাকউডের আউটে। ৭৭ বলে ৫ বাউন্ডারিতে ২৮ রান করে তাইজুলকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন তিনি। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারায় পঞ্চম উইকেট। ওই শেষ, এরপর প্রায় ২০ ওভার বল করেও আর সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ। বনার আর জোশুয়ার প্রতিরোধে হতাশায় কেটেছে শেষ বিকেল। এই দুই ব্যাটসম্যান অবিচ্ছিন্ন ৪৫ রানের জুটি গড়েছেন ষষ্ঠ উইকেটে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris