শুক্রবার

১৯শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপুরে আলুর নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

Paris
Update : সোমবার, ২৮ ডিসেম্বর, ২০২০

মোবারক হোসেন শিশির, দুর্গাপুর : দিন যতই যাচ্ছে ততই আলু গাছে পরিপক্কতা বাড়ায় দুর্গাপুরের কৃষকরা এখন আলুর নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। এবছর শুরুতেই ঠান্ডা সত্ত্বেও নাভিধসা ও কান্ড পঁচা রোগ নেই। সাথে ঘনকুয়াশা না থাকায় এবার আলু চাষিরা ভাল ফলনের সম্ভাবনা দেখছেন কৃষকরা। আলুর দাম বেশি হওয়ায় এ বছর উপজেলায় ব্যাপক হারে আলু চাষ করেছেন কৃষকরা।

আগের বছর গুলোতে এ সময়ে তীব্র শীত ও ঘনকুয়াশার কারনে উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকার আলুক্ষেতে মারাত্নক ‘নাভিধসা’ (লেট-বাইট) ও কান্ড পঁচা (স্ট্যামরড) রোগের প্রকোপে আলুর মারাত্নক ক্ষতি হলেও এবার এখন পর্যন্ত ফসল রয়েছে সর্ম্পূণ রোগ মুক্ত ও নিরাপদ। সেই সাথে দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের সার্বক্ষণিক আলু চাষিদের মাঠ পর্যায়ে পরামর্শ প্রদানে রোগের প্রকোপ নেই বলে জানিয়েছেন অধিকাংশ আলু চাষিরা।

উপজেলার বাজুখলশী হাটকানপাড়া এলাকার আলু চাষি আশরাফ আলী জানালেন, তিনি ৩৫বিঘা জমি লিজ নিয়ে এবার আলু চাষ করেছেন। শুরু থেকে এবার যেন ভাগ্য সহায়। ঠান্ডা সত্ত্বেও নাভিধসা ও কান্ড পঁচা রোগ এবং ঘনকুয়াশা না থাকার কারনে আলু গাছের চেহারা অনেক ভাল। এখন পর্যন্ত আবহাওয়ার কোন বিরুপ প্রতিক্রিয়া হয়নি। তাছাড়া তার জমির আলুসহ আশে পাশের প্রায় সব আলুর ফসল গুলো এবছর এখন পর্যন্ত অনেক ভাল রয়েছে বলে জানান তিনি।

আলু চাষিরা জানান, চলিত বছরে এখন পর্যন্ত আবহাওয়া ঠান্ডা থাকলেও উল্লেখ যোগ্য হারে কুয়াশা ও শিশির পাত হচ্ছে না বললেই চলে। এজন্য নাবিধসা-কান্ড পঁচা রোগ নেই আলুতে। তবে সহসা এ ভাল আবহাওয়া কেটে গিয়ে সামনের দিনগুলোতে শৈত্য প্রবাহ চলতে থাকলে শেষ পর্যন্ত আলু ক্ষেতের কোন ক্ষতি হয়-কিনা তা নিয়ে কিছু আলু চাষিরা শংকিত রয়েছেন যারা মৌসুমের শেষের দিকে তাদের জমিতে আলু করেছেন। কিন্তু মৌসুমের প্রথম দিকে যারা আগাম আলু লাগিয়েছেন এ নিয়ে তাদের কোন দু:চিন্তা নেই বললেই চলে। ঘনকুয়াশা না থাকার কারনে এখন পর্যন্ত এ আবহাওয়াটি আলু চাষে অনুকুলে রয়েছে।

এবার আলুর ভাল ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে। দুর্গাপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর সূত্রে জানাযায়, উপজেলায় চলিত মৌসুমে এবার ১হাজার ৮২০হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নিধারণ করা হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে অর্জিত মাত্রা ছাড়িয়ে আরো বেশী জমিতে আলুর চাষাবাদ হয়েছে।
দুর্গাপুর পৌর এলাকার শালঘরিয়া গ্রামের আবদুস সামাদ জানান, তিনি প্রায় ১ হেক্টর জমিতে আলু চাষ করেছে। উচ্চ দামে আলু বীজ ক্রয় করে আলু রোপণ করা হয়েছে। শুরুতেই আলুর গাছের পরিপক্বতা দেখে খুব ভাল মনে হচ্ছে। ধারনা করা হচ্ছে এবার গতবারের চেয়ে লাভের অংক একটু বেশি হবে।

দাউকান্দি গ্রামের অর্ধশত বিঘা জমিতে আলু চাষকারি স্কুল শিক্ষক মুনতাসির রাজু জানান, এবার ঘন কুয়াশা না থাকায় কনকনে ঠান্ডায় আলুর গাছের চেহারা অনেক ভাল দেখা যাচ্ছে। পুরো উপজেলায় যে পরিমান আলু চাষ করা হয়েছে প্রায় জমিতে এখন আলু গাছের পরিপক্বতা ভাল রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মসিউর রহমান জানান, উপজেলার আলু চাষিরা এখন নিবিড় পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছে। উপজেলায় প্রায় এলাকায় এবার আলুর খেত ভাল হয়েছে। তাছাড়াও এবার এখন পর্যন্ত বৈরি আবওহায়া না হওয়ায় আলু চাষিরা বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে। দুর্গাপুর কৃষি অফিসসহ মাঠ পর্যায়ে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষনিক আলুচাষিদের পরামর্শ ও সার্বিক সহযোগীতা প্রদান করছেন।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris