এইচএসসিতে অটোপাসের নম্বর নির্ধারণে নীতিমালা তৈরি

এফএনএস : চলতি মাসের শেষ দিকে ২০১৯-২০ এইচএসসি ও সমমানের ফলাফল প্রকাশ করা হবে। অটোপাসের নম্বরপত্র তৈরিতে জাতীয় পরামর্শক কমিটি একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছে। সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। সেই নীতিমালা অনুমোদন দেয়া হলে এক সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল তৈরির কাজ শেষ করা হবে বলে বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। একাধিক শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে নম্বরপত্র তৈরিতে শিক্ষা বোর্ড থেকে একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। বর্তমানে সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে।
এ নীতিমালা অনুমোদন পেলে সেই ফরম্যাটে নম্বরপত্র তৈরি করা হবে। সবগুলো শিক্ষা বোর্ডে এক সপ্তাহের মধ্যে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষার ফলাফল তৈরির কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। আগামী ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যে এ পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হতে পারে বলে জানা গেছে। নীতিমালা অনুযায়ী, পরীক্ষার্থীদের বিষয়ভিত্তিক নম্বর নির্ধারণ করা হবে। তার মধ্যে জেএসসিতে ২৫ শতাংশ এবং এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ওপর ৭৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হবে। যারা জেএসসিতে অংশগ্রহণ করেনি তাদের ক্ষেত্রে শতভাগ নম্বর এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ওপর নির্ধারণ করা হবে। কেউ আগের দুই পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলেও অতিরিক্ত বিষয়ে ও ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর যুক্ত থাকলে তাদের ক্ষেত্রে এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পরিবর্তন হতে পারে। বিষয়ভিত্তিক ইমপ্রুভমেন্ট পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রেও একই সূত্র অনুসরণ করতে নীতিমালায় উল্লেখ করা হয়েছে।
জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম আমিরুল ইসলাম গতকাল শনিবার বলেন, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরির কাজ করা হচ্ছে। ডিসেম্বরের মধ্যে এ ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে। একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে কোডিং করে ফলাফল তৈরি করা হবে। তিনি আরও বলেন, ফলাফল তৈরির জন্য দেশের সব শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকরা মিলে সভা করেছি। ফলাফল তৈরির সব প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। জাতীয় পরামর্শক কমিটি যে দিকনির্দেশনা দেবেন তার ভিত্তিতে আমরা ফল তৈরির কাজ শুরুর প্রস্তুতি নিয়েছি। নম্বর নির্ধারণ করার নীতিমালা চূড়ান্ত হলে সব শিক্ষা বোর্ডে ফলাফল তৈরির কাজ শুরু করা হবে।
এদিকে চলতি বছর করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এইচএসসি-সমমান পরীক্ষা বাতিল করা হয়। সব পরীক্ষার্থীকে অটোপাসের ঘোষণা দেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এজন্য একটি জাতীয় পরামর্শক কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে অটোপাসের বিষয়ভিত্তিক নম্বর নির্ধারণ করা হবে বলেও ঘোষণা দেয়া হয়। বর্তমানে তাদের পরামর্শের ভিত্তিতে একটি নীতিমালা তৈরি করে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। কারিগরি স্তরের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে শিক্ষকদের জন্য আসছে নতুন নির্দেশনা: ২০২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের করা সব অ্যাসাইনমেন্ট সংরক্ষণে রাখতে হবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে। জাতীয় পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম মূল্যায়ন এবং শিক্ষার্থীর বিগত বছরের ঘাটতি পূরণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। শিগগিরই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিষয়ে একটি গাইডলাইন দেবে সরকার। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ গোলাম মো. ফারুক বলেন, শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি দূর করতে আমরা দুই ভাবে কাজ করছি। একটি হচ্ছে প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের সব অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করবে। সংগ্রহ করা অ্যাসাইনমেন্টগুলো দেখে শিক্ষার্থীদের কোথায় কতটুকু দুর্বলতা বা গ্যাপ রয়েছে, তা নির্ণয় করে পরের বছর ঘাটতিগুলো পূরণ করবে।
শিক্ষকরা নিজেরা শিক্ষার্থীদের সমস্যা চিহ্নিত করবে। আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে আমরা জাতীয় পর্যায়ে অ্যাসাইনমেন্ট এনে আমাদের দেশের শিক্ষা গত এক বছরে কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, তা দেখার চেষ্টা করবো। জাতীয় পর্যায়ের এই অ্যাসেসমেন্ট আমাদের পলিসি তৈরিতে কাজ করবে। মহাপরিচালক জানান, এক বিদ্যালয়ের সঙ্গে আরেক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা বা গ্যাপ একরকম হবে না। আলাদা হবে। তাই জাতীয় পর্যায়ে অ্যাসাইনমেন্টগুলো এনে মূল্যায়ন করা হবে। গত ৮ মার্চ দেশে করোনা রোগী শনাক্ত হলে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ১৭ মার্চ বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়িয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
এরপর অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সংসদ বাংলাদেশ টেলিভিশন এবং বেতারেও পাঠদান অব্যাহত রাখা হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেয়। এ ছাড়া শিক্ষকরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পাঠদান অব্যাহত রাখেন। কিন্তু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দীর্ঘ বন্ধ থাকায় গত ১ নভেম্বর থেকে ৩০ দিনের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য গত ১ নভেম্বর থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। এনসিটিবির নির্দেশনা অনুযায়ী বিষয়ভিত্তিক অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া এবং সংগ্রহ করা হয় স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনায় বলা হয়, অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়নের মাধ্যমে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের দুর্বল দিক চিহ্নিত করবেন এবং পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে সেগুলোর ওপর বিশেষ নজর দিয়ে কাক্সিক্ষত শিখন ফল অর্জনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা শিক্ষকদের মূল্যায়নসহ অ্যাসাইনমেন্টগুলো সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবেন। নির্দেশনা বাস্তবায়নে সকল আঞ্চলিক উপপরিচালক, জেলা শিক্ষা অফিসার, উপজেলা/থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সমন্বয় করার কথা বলা হয়। প্রসঙ্গত, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপদ রাখতে এইচএসসি পরীক্ষা, জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা এবং প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি পরীক্ষা বাতিল করে দুই মন্ত্রণালয়।
আরও খবর
- হোয়াইটওয়াশ করতে পারল না টাইগাররা
- ভারতে মন্দিরের কুয়ার ছাঁদ ধসে নিহত ৩৫
- ৬০ হাজার অভিবাসীর কাজের সুযোগ জার্মানিতে
- মডেলের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ
- এবার কাবুলিওয়ালা হচ্ছেন মিঠুন চক্রবর্তী
- জমি নিয়ে বিরোধ মান্দায় প্রতিপক্ষের মারধরে আহত ৬
- বাগমারায় সালেহা ইমারত কিরাত প্রতিযোগিতার উদ্বোধন আজ শনিবার
- মরিচের গুড়া ছিটিয়ে ১৪ লক্ষ টাকা ছিনতাই মামলার আন্তঃজেলা চক্রর সক্রিয় দুই সদস্য গ্রেফতার
- নওগাঁয় ১২ ডাকাত আটক ট্রাক, চাল, টাকা উদ্ধার
- তানোরে যুবদলের ওয়ার্ড কমিটি গঠন মারপিট হামলা আহত সদস্য সচিব
- টাকা ফেরতের জন্য মাদ্রাসার সুপারের কলার ধরে টানাহেঁছড়া!
- কানাডার পার্লামেন্টে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস বিল পাস
- জাহাজ থেকে পড়ে নিখোঁজ প্রকৌশলীর লাশ উদ্ধার
- নাটোরে বিএনপির মঞ্চ ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ
- তানোরে বিএমডিএ’র সেচ প্রকল্প হুমকির মূখে