তানোর প্রতিনিধি : রাজশাহীর তানোর আব্দুল করিম সরকার সরকারী ডিগ্রী কলেজে ১৬ ডিসেম্বর বুধবার মহান বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ভাষণ বিভ্রাটের ঘটনায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে, দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া, বইছে মুখরোচক নানা গুঞ্জন। এ ঘটনায় অভিযোগের তীর উঠেছে শিক্ষক আব্দুল কারিমের দিকে। অন্যদিকে এ ঘটনায় পরস্পরবিরোধী বক্তব্য উঠে এসেছে। কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল বা কাকতালীয় ঘটনা মাত্র, তবে কেউ কেউ বলছে, জামায়াত মতাদর্শী শিক্ষক আব্দুল কারিম কলেজ ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে বির্তকিত করতে কৌশলে এমন ঘটনার সৃষ্টি করতে পারে, কারণ তিনিই বিষয়টি হাট-বাজারে ফলাও করে আলোচনা করেছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে। তবে শিক্ষক আব্দুল কারিম এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা গেছে, বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ও কালজয়ী ভাষণ আজও স্বাধীনতাপ্রেমী মানুষকে অনুপ্রাণিত করে। বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী, স্বাধীনতা ও বিজয় দিবস, জাতীয় শোকদিবস-সব অনুষ্ঠানেই ঐতিহাসিক এই ভাষণ প্রচার করা হয়। কিন্তু তানোর আবদুল করিম সরকার সরকারি কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে ঘটেছে গুরুতর ভাষণ বিভ্রাট! গত ১৬ ডিসেম্বর বুধবার বিজয় দিবসের সকালে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ বাজাতে গিয়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণ বাজানো হয়েছে। এদিকে ঘটনা টের পেয়ে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা ছুটে গিয়ে জিয়াউর রহমানের ভাষণ বাজানো বন্ধ করেন। কলেজ কর্তৃপক্ষের এমন দায়িত্ব অবহেলায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে স্থানীয়দের মাঝে উঠেছে সমালোচনার ঝড়।
কলেজের একাধিক শিক্ষক ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা জানান, সকালে কলেজের শিক্ষক কর্মচারীরা কলেজ শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এ সময় কলেজের নিজস্ব সাউন্ড সিস্টেমে বাজতে শুরু করে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাষণ। কিন্তু বিষয়টি প্রথমে অধ্যক্ষ শিক্ষক কর্মচারীরা কেউই খেয়াল করেননি। তবে স্থানীয় গোল্লপাড়া বাজারে অবস্থানকারী দলীয় নেতাকর্মীরা শুনতে পেয়ে কলেজে ছুটে গিয়ে ভাষণ বন্ধ করেন। পরে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সংগ্রহ করে সেটি বাজানো শুরু হয়। কীভাবে এমন গুরুতর ভাষণ বিভ্রাট ঘটলো জানতে চাইলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল আজিজ বলেন, মঙ্গলবার কলেজের পিয়ন আরিফ ও ফুলকুমারকে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ একটি মেমোরি কার্ডে তুলে আনতে স্থানীয় একটি মাইক সার্ভিসে পাঠানো হয়।
সেখান থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণের বদলে জিয়াউর রহমানের ভাষণ দেয়া হয়। এ সময় মেমোরি কার্ডে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ তোলা হয়েছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নি। বিজয় দিবসের কর্মসূচির শুরুতে ভাষণ বাজাতে গিয়ে এই বিভ্রাট ঘটে গেছে। এটি ইচ্ছাকৃত নয়- ভুলক্রমে ঘটেছে বলে অধ্যক্ষের দাবি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ বিষয়টিকে স্বাধীনতার বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র মনে করে তদন্তের দাবি জানিয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের দৃস্টান্তমুলক শাস্তির দাবি করেছেন তারা।