শনিবার

২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুর চার খুনির রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিতের নির্দেশ

Paris
Update : বুধবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২০

এফএনএস : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যা মামলায় দণ্ডিত চার আসামির রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের খেতাব বাতিলে সরকারের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে এই নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও সংশ্লিষ্ট চার আসামিদের এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি রুল শুনানি চলমান থাকা অবস্থায় চার আসামির রাষ্ট্রীয় খেতাব স্থগিত থাকবে। যে চারজনের পদক স্থগিত করা হয়েছে তারা হলেন- শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, এএম রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীন ওরফে মুসলেম উদ্দিন খান।

এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেন। আইনজীবী সুবীর নন্দী দাসের করা রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম (একে) খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায় ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল কালীপদ মৃধা। আইনজীবীরা জানান, বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘটনায় জড়িত চার দণ্ডিত আসািম নূর চৌধুরী, শরীফুল হক ডালিম, রাশেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীনের মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বীরত্বের জন্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে পাওয়া খেতাব স্থগিতের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ ছাড়া রুল নিষ্পত্তি না পর্যন্ত হাইকোর্ট বঙ্গবন্ধুর পলাতক চার খুনির খেতাব স্থগিত রাখতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর খুনি এই চারজনের খেতাব বাতিলে বিবাদিদের নিস্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, মর্মে রুল জারি করেছেন। রিটকারীর পক্ষের আইনজীবী আবদুল কাইয়ুম খান সাংবাদিকদের বলেন, যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তারা মুক্তিযোদ্ধা। কিন্তু পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের যে খেতাবগুলো দেয়া হয়েছে সেটা তাদের কারো অধিকার না। রাষ্ট্র তাদের স্বীকৃতি দিয়েছে, রাষ্ট্র চাইলে সে খেতাব কেড়েও নিতে পারে। রিট আবেদনে বলা হয়, ১৯৭৩ সালে সাতজনকে বীরশ্রেষ্ঠ, ৬৮ জনকে বীর উত্তম, ১৭৫ জনকে বীর বিক্রম ও ৪২৬ জনকে বীর প্রতীক উপাধি দেয়া হয়।

১৯৭৩ সালের একই সময়ে বছরের ১৫ ডিসেম্বর গেজেট প্রকাশ করা হয়। নূর চৌধুরীকে বীর বিক্রম, শরীফুল হক ডালিমকে বীর উত্তম, রাসেদ চৌধুরী ও মোসলেহ উদ্দীনকে বীর প্রতীক খেতাব দেয়া হয়। এর বৈধতা নিয়েই রিটটি করা হয়েছে। আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এ রকম খেতাব কেড়ে নেয়ার নজির আছে। যুক্তরাষ্ট্র, নিউজিল্যান্ড, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশের নজির আবেদনে বলেছি। বাংলাদেশেও নজির আছে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার দীর্ঘদিন পর আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে ২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি রাতে পাঁচ খুনি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশিদ খান, বজলুল হুদা, মহিউদ্দিন আহমেদ ও এ কে এম মহিউদ্দিনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

এ ছাড়া গত ১১ এপ্রিল রাতে বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি আবদুল মাজেদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। তবে এখনো পলাতক পাঁচ খুনির মধ্যে রাশেদ চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ও নুর চৌধুরী কানাডায় রয়েছেন বলে সরকার নিশ্চিত হয়েছে। খন্দকার আবদুর রশিদ, শরীফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন কোন দেশে অবস্থান করছেন, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি সরকার।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris