এফএনএস : হবিগঞ্জে মামলা করে স্ত্রী ও সন্তানকে না পাওয়ার ক্ষোভে আদালত চত্বরে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন। গতকাল সোমবার দুপুরে তিনি নিজের বুকে ছুরিকাঘাত করে আত্মহত্যা করেন। নিহত যুবক হাফিজুর রহমান (৩০) শহরের কামড়াপুর গ্রামের নূর মিয়ার ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাফিজুর রহমান কয়েক বছর আগে বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের আবদুল খালেকের মেয়ে বুশরা বেগমকে (২৫) বিয়ে করেন। তাদের একটি সন্তানও রয়েছে। ইতোমধ্যে পারিবারিক বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হয়। একপর্যায়ে বুশরা বাবার বাড়ি চলে যান।
পরে স্ত্রী ও সন্তানকে পাওয়ার জন্য আদালতের দ্বারস্থ হন হাফিজুর। মামলায় গতকাল সোমবার দুপুরে আদালতে হাজির হয়ে বুশরা জানান, তিনি স্বামীর সঙ্গে যাবেন না। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাকে বাবার জিম্মায় যাওয়ার আদেশ দেন। এরপর হাফিজুর আদালতের ভিতর থেকে বের হয়ে নিজের বুকে ছুরি চালান। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে উপস্থিত লোকজন তাকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে প্রেরণ করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে সিলেটে প্রেরণ করা হলে পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। সদর থানার ওসি (তদন্ত) দৌস মোহাম্মদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সিরাজগঞ্জে আদালতের এজলাসেই বিষপানে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন মোক্তার হোসেন (৩৫) নামে এক আসামি। তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতের এজলাসে এ ঘটনা ঘটে। মোক্তার হোসেন রায়গঞ্জ উপজেলার মিত্র তেঘরি গ্রামের সাইফুল ইসলামের ছেলে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় দুপুরে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে হাজিরা দিতে এসেছিলেন মোক্তার।
মামলার শুনানি চলাকালে এজলাসে দাঁড়িয়ে হঠাৎ করেই বিষপান করেন তিনি। এ সময় বিচারক তাকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। সিরাজগঞ্জ কোর্ট পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আসামি হঠাৎ করে কীটনাশকপানে অসুস্থ হয়ে পড়লে বিচারকের নির্দেশে তাকে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট আনোয়ার পারভেজ লিমন বলেন, আদালতে স্বেচ্ছায় হাজিরা দিতে এসেছিলেন মোক্তার। শুনানি চলাকালে হঠাৎ করে তার হাত থেকে একটি প্লাস্টিকের বোতল পড়ে যায়। বোতল থেকে পানির মতো কীটনাশক মেঝেতে গড়িয়ে পড়ে।
আসামি মোক্তারও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন বিচারক আব্দুল্লাহ আল-মামুন তাকে হাসপাতালে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি কীটনাশক পান করেছেন কিনা, সেটা আমাদের চোখে পড়েনি। একই আদালতের অপর এপিপি অ্যাডভোকেট কায়সার আহমেদ লিটন বলেন, এর আগের তারিখেও তিনি হাজিরা দিতে এলে বিচারক জামিন বাতিলের আদেশ দেওয়ার পর আদালত প্রাঙ্গণেই সিন ক্রিয়েট করেন ওই আসামি। পরে আদালত তাকে জামিন দিয়েছিলেন।