স্টাফ রিপোর্টার : ভোরে কুয়াশা চাদরে ঢাঁকা রাজশাহী জেঁকে বসতে শুরু করেছে শীত। কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতি। রাজশাহীর আকাশে সূর্যের দেখা নেই তিন দিন ধরে। হিমেল বাতাসের পাশাপাশি ঘন কুয়াশায় বিপর্যস্ত ছিন্নমূল খেটে খাওয়া মানুষের জনজীবন। ঠান্ডা বাতাসে সবচেয়ে দুর্ভোগে পড়েছে ভাসমান ও ছিন্নমূল মানুষ। এমন আবহাওয়ায় অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন ঠান্ডা জনিত রোগে। এদিকে ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে। গত এক সপ্তাহে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে চিকিৎসা নিয়েছে পাঁচশোর বেশি। মারা গেছে ১২ শিশু।
উত্তরের জনপদ রাজশাহীতে গেল কয়েকদিন ধরেই দিনের বেশিরভাগ সময় সূর্যের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। নেমে এসেছে শীত। শৈতপ্রবাহ এখনও শুরু না হলেও সূর্যের দেখা না পাওয়ায় শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, কুয়াশা কেটে গেলে শীত আরও বাড়বে। এদিকে শীতের শুরুতে রাজশাহী অঞ্চলে ঠান্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেছে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের ইনডোর এবং আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তিনি জানান, প্রতিবছরই শীতের শুরুতে ঠন্ডা জনিত রোগীর সংখ্যা বেড়ে যায়। এবারও সে রকমই দেখা যাচ্ছে।
তবে তাদের কাছে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত রয়েছে। তারা চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ডা. সাইফুল ফেরদৌস বলেন, গত সপ্তাহের শুরু থেকে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। এদের বেশিরভাগই ঠন্ডা জনিত ডাইরিয়া, শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও হৃদরোগ নিয়ে হাসপাতালে আসছেন। কুয়াশাচ্ছন্ন প্রকৃতির কারণে দিনেও মাঝে মধ্যে হেড লাইট জ্বালিয়ে বিভিন্ন যানবাহনকে চলাফেরা করতে হচ্ছে। ঘন কুয়াশা আর শীতের কারণে ফসলের মাঠেও দেখা দিয়েছে বিপর্যয়ের আশঙ্কা।
চলতি রবি মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চলের মাঠে রয়েছে আলু, গম, পান, ডাল, ভুট্টা, সবজি ও বোরোর বীজতলা। আলুর ফসলে লেট ব্লাইট ছড়িয়ে পড়ছে। আর বোরো খেতের বীজতলায় দেখা দিয়েছে কোল্ড ইনজুরি। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, রাজশাহীতে র্সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬ থেকে ২০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে নেমে এসেছে। সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার ব্যবধান কমে আসা এবং সূর্যের দেখা না পাওয়ার কারণে শীত অনুভূত হচ্ছে বেশি। কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর তাপমাত্রা আরও কমবে। তখন শুরু হতে পারে শৈত্যপ্রবাহ।