মঙ্গলবার

২৩শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১০ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সর্বশেষ সংবাদ
রাজশাহীর পদ্মা নদীতে গোসলে নেমে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষার্থীর মৃত্যু রাজশাহীতে প্রতারণার ক্লু ধরে শিক্ষা উপবৃত্তির টাকা আত্মসাত চক্রের মুল হোতসহ ৮ জন গ্রেফতার রাজশাহীর ঢাকা বাসস্ট্যান্ডে এভারগ্রীণ’র দখল করে নির্মাণাধীণ কাউন্টার উচ্ছেদ করলো আরডিএ যুদ্ধ ব্যয়ের অর্থ জলবায়ুর প্রভাব মোকাবেলায় ব্যবহার করা হলে বিশ্ব রক্ষা পেতো : প্রধানমন্ত্রী শিবগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানির তীব্র সংকট, ভোগান্তিতে রোগী-স্বজনরা নিয়ামতপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড রাজশাহীতে নারীর মোবাইল ফোন-ব্যাগ ছিনতাই, তিন ছিনতাইকারী গ্রেফতার রাসিককে সুদৃঢ় আর্থিক ভিত্তির উপর দাঁড় করতে চাই : মেয়র কাতারের আমির আসছেন আজ, সম্ভাবনা কাজে লাগিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের বাজার দখলের সুযোগ বালিশকাণ্ডের সেই প্রতিষ্ঠান নির্মাণ করছে রাবির হল, অনিয়মের অভিযোগে দুদকের হানা/৩

মানুষের ক্রোধ ও ধৈর্য থাকার হিকমত

Paris
Update : শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০

এফএনএস : মানুষের স্বভাবের প্রতি দৃষ্টি দিলে বোঝা যায়, মানুষকে বিভিন্ন ধরনের গুণ দেওয়া হয়েছে। এটা এজন্য দেওয়া হয়েছে, যাতে বিভিন্ন সময় অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে উপযুক্ত গুণ সে ব্যবহার করতে পারে। মানুষের স্বভাবগুলোর মধ্য থেকে একটি স্বভাব বকরির স্বভাবের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ, আরেকটি স্বভাব বাঘের স্বভাবের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। সুতরাং আল্লাহ তাআলা মানবজাতি থেকে চান যেন সে বকরি হওয়ার স্থানে বকরি হয়ে যাক এবং বাঘ হওয়ার স্থানে বাঘ হয়ে যাক। আল্লাহ তাআলা কখনো চান না যে সে সর্বদা সব স্থানে বকরি হয়েই থাকুক এবং এটাও চান না যে সর্বদা সব স্থানে বাঘ হয়েই থাকুক।

যেভাবে তিনি এটা চান না যে মানুষ সর্বদা শায়িত অবস্থায় থাকুক অথবা জাগ্রত অবস্থায় থাকুক, অথবা সর্বদা আহাররত থাকুক, অথবা সর্বদা মুখ বন্ধ করে রাখুক, তেমনি তিনি এটাও চান না যে মানুষ তার অভ্যন্তরীণ শক্তি থেকে শুধু একটি শক্তির ওপর সর্বক্ষমতা প্রয়োগ করুক আর আল্লাহপ্রদত্ত অন্য শক্তিগুলোকে অনর্থক মনে করুক। আল্লাহ তাআলা যদি মানুষের মধ্যে দয়া, কোমলতা ও সহনশীলতার গুণ রেখে থাকেন তাহলে সে আল্লাহই তো তার মধ্যে ক্রোধ ও প্রতিশোধ নেওয়ার স্পৃহা রেখেছেন।

সুতরাং এটা কতটুকু সমীচীন যে আল্লাহপ্রদত্ত একটি শক্তিকে ব্যবহারের ক্ষেত্রে সীমা লঙ্ঘন করা হবে আর অন্য শক্তিকে নিজের থেকে কর্তন করে নিক্ষেপ করা হবে। এতে তো আল্লাহর ওপর এক ধরনের অভিযোগ আরোপ হয়। বিষয়টি এমন হলো যে তিনি মানুষকে কিছু শক্তি এমন প্রদান করেছেন যা ব্যবহারযোগ্য নয়। কেননা এ বিভিন্ন শক্তি তিনিই মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন।

অতএব স্মরণ রাখা উচিত, মানুষের কোনো শক্তিই মন্দ নয়; মন্দ হলো যেখানে অনুমতি নেই সেখানে শক্তি ব্যবহার করা। এ বিষয়ে ইসলামের নির্দেশনা হলো, ‘যদি কেউ তোমাকে কষ্ট দেয়, যেমনÑদাঁত ভেঙে ফেলল, অথবা চোখ ফুটো করে দিল, তাহলে তার শাস্তি ততটুকু দেওয়া যথার্থ যতটুকু সে দিয়েছে। কিন্তু যদি তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও (ক্ষমার কারণে হয়তো ভালো পরিণাম হবে) সে সংশোধন হয়ে যাবে (অপরাধী ভবিষ্যতে এ কাজ থেকে বিরত থাকবে) এ অবস্থায় ক্ষমা করে দেওয়াটাই উত্তম এবং এর প্রতিদান আল্লাহর কাছে প্রাপ্ত হবে।

এটা হলো বিজ্ঞজনোচিত পদ্ধতি, যার ওপর জগতের শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত। সময় ও স্থান অনুযায়ী কঠোরতা ও কোমলতার আচরণ করা বিচক্ষণতার পরিচায়ক। যেমনটি আমরা অবলোকন করছি যে আমরা সর্বদা একপ্রকার খাদ্য গ্রহণ করি না; বরং সময় উপযোগী ঠাণ্ডা ও গরম খাবারের পরিবর্তন হতে থাকে এবং ঠাণ্ডা ও গরমের অবস্থা হিসেবে পোশাকও পরিবর্তন হয়।

তদ্রƒপ আমাদের চারিত্রিক বিষয়টিও অবস্থানুপাতে পরিবর্তন চায়। এক জায়গায় ক্রোধ প্রদর্শনের ক্ষেত্র হয়, সেখানে কোমলতা ও ক্ষমা প্রদর্শন অবস্থাকে বিগড়ে দেয়। আরেক জায়গায় কোমলতা ও ক্ষমা প্রদর্শন উপযোগী, সেখানে ভীতি প্রদর্শন করা নির্বুদ্ধিতার পরিচয় হয়।

মোটকথা, স্থান-কাল ও পাত্র অনুযায়ী পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। তাই যে ব্যক্তি অবস্থা অনুপাতে পদক্ষেপ গ্রহণ করে না সে পশু, মানুষ নয়। সে বন্য পশু, ভদ্র নয়। কোরআনের শিক্ষা এটা নয় যে কোনো স্থানে খারাপের প্রতিরোধ করা হবে না এবং দুষ্ট ও জালিমদের শাস্তি প্রদান করা হবে না; বরং কোরআনের শিক্ষা হলো, দেখা উচিত স্থান ও অবস্থা অন্যায়কে ক্ষমা করার না শাস্তি প্রদান করার।

অপরাধী ও জনসাধারণের জন্য যা কল্যাণকর তা-ই অবলম্বন করা উচিত। কখনো অপরাধীকে ক্ষমা করে দেওয়ার দ্বারা তার দৌরাত্ম্য আরো বেড়ে যায়, তাই আল্লাহ তাআলা বলেছেন, অন্ধদের মতো শুধু ক্ষমা করার অভ্যাসই অবলম্বন কোরো না; বরং চিন্তা করে দেখো, বাস্তবকল্যাণ কোন ক্ষেত্রে; ক্ষমা করার মাঝে নাকি শাস্তি দেওয়ার মাঝে। অতএব স্থান ও অবস্থা অনুপাতে যা সমীচীন সেটাই গ্রহণ করবে। (আহকামে ইসলাম আকল কি নজর মে থেকে সংক্ষিপ্ত ভাষান্তর করেছেন তাজুল ইসলাম।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris