শুক্রবার

২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

চারঘাটে সমিতির আড়ালে সুদের ব্যবসা?

Paris
Update : বৃহস্পতিবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২০

আবুল কালাম আজাদ (সনি) : রাজশাহীর চারঘাটে সমবায় সমিতির নামে অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ঋণ দিয়ে কিস্তি আদায়ের মাধ্যমে রমরমা সুদের ব্যবসা চলছে। শতকরা ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত সুদ আদায়সহ বার্ষিক মেয়াদের পরিবর্তে মাসিক মেয়াদে সুদাসল আদায় করা হচ্ছে।

স্থানীয় সহজ সরল মানুষ এনজিওর আদলে গড়া এসব সমিতির খপ্পরে পড়ে অতিরিক্ত সুদ ও স্বল্প সময়ের ঋণ পরিশোধের ফলে পুঁজি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ছেন। সমবায় সমিতি হিসেবে রেজিস্ট্রেশন নেয়া হলেও সমবায় আইন কানুন কিছুই মানছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। এমনকি সরকারি ছুটির দিনেও তারা কিস্তি আদায় করছে, যা সম্পূর্ণভাবে আইন বিরুদ্ধ কাজ। চারঘাট উপজেলায় নামে বেনামে প্রায় ডজন খানেকের বেশি সমবায় সমিতি সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এক একটা সমিতিতে কোটি টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা হয়েছে। সমবায়ের রেজিস্ট্রেশন নিয়ে সুদের রমরমা ব্যবসা করার লক্ষ্যেই স্থানীয় সমবায় অফিসের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সমিতি গঠন করা হয়েছে। এই সমিতি গুলো মাধ্যমে নিজেদের এনজিও পরিচয় দিয়ে নামে-বেনামে সদস্য সংগ্রহ করে কোনো রকমে ঋণ গছিয়ে দেয়া হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গ্রাহকদের কাছ থেকে ২৫ শতাংশ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ আদায় করা হচ্ছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো বার্ষিক মেয়াদের পরিবর্তে মাসিক বা ত্রৈমাসিক মেয়াদে ঋণ দিচ্ছে যা সম্পূর্ণরূপে সমবায় আইন বা দেশের প্রচলিত বেসরকারি আর্থিক সংস্থার নিয়মনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। এভাবে তারা অতিরিক্ত সুদ আদায় এবং সরকারি আইন ভঙ্গ করলেও স্থানীয় সমবায় অফিস কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় গ্রাহকরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন এবং অতিরিক্ত সুদ প্রদানের মাধ্যমে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন।
কয়েকজন গ্রাহক জানান, কিছু সমবায় সমিতি নিজেদের এনজিও পরিচয় দিয়ে অল্প সুদে অধিক হারে ঋণ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদেরকে সদস্য করেছে। এরপর সঞ্চয় করার মাধ্যমে গচ্ছিত টাকা ফেরত না দিয়ে এর বিপরীতে তাদেরকে ঋণ নিতে বাধ্য করেছে এবং চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ আদায় করা হচ্ছে। মাত্র এক মাস বা তিন মাস মেয়াদে ঋণ পরিশোধ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। এতে তারা ঋণ নিয়ে চরম বিপদে পড়েছেন। অথচ সদস্য করার সময় বলা হয়েছিল অন্যান্য সমবায় ও এনজিও যেভাবে পরিচালিত হয় সেভাবেই পরিচালনা করা হবে এই সমিতি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দারিদ্র কল্যাণ সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতি লিমিটেডের পরিচালক গোলাম মোর্তজা জানান, আইনের বাইরে তারা সমিতি পরিচালনা করছেন না। গ্রাহকদের কাছে থেকে অতিরিক্ত সুদও আদায় করা হচ্ছেনা। চারঘাট উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা সুভাষ কুমার দাস বলেন, সমিতিগুলো কোনোভাবেই আইনের বাইরে পরিচালিত হতে পারে না। এ ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে সমিতিগুলো সরকারী আইনবহির্ভূত কর্মকাণ্ড চালালে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরোও অন্যান্য খবর
Paris