এফএনএস : আইটি বিভাগের গাফিলতি ও অদূরদর্শিতায় রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক-রাকাবে লাখ লাখ কৃষকের ব্যাংক হিসাবের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সম্প্রতি কোর ব্যাংকিং সল্যুশন-সিবিএস সফটওয়্যারের মাধ্যমে রাকাব শাখাগুলোকে পুরোপুরি অটোমেশনের আওতায় আনার কাজ শুরু করে। কিন্তু সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার কেনা নিয়ে বড় ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতি ৩ মাস পর পর ব্যাংক হিসাবের হালনাগাদ তথ্য জানিয়ে প্রতিবেদন জমা দেয় রাকাব। তাতে দেখা যায় সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে ৬ লাখ ২৯ হাজার ২৮৯টি হিসাব কম। জুনে যা ছিল ১৯ লাখ ৬৪ হাজার ৪১৬টি। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে সেপ্টেম্বরে কৃষকদের ১০ টাকার ব্যাংক হিসাবের সংখ্যা আগের ত্রৈমাসিকের ৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ কমে ৯৬ লাখ ৯৮ হাজার ১৫২টিতে নেমে আসে। যা গত জুনে যা ছিল ১ কোটি ২ লাখ ৭০ হাজার ১৪৩।
রাকাবকে বাদ দিয়ে হিসাব করলে আলোচ্য ত্রৈমাসিকে হিসাবের সংখ্যা শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ বাড়ে। অবশ্য খোয়া যাওয়া হিসাবে তেমন টাকা ছিল না। তাই এতোগুলো হিসাব কমলেও তা আমানতে খুব একটা প্রভাব ফেলেনি, বরং মোট আমানত ১১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশের সব রাষ্ট্রায়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংককে অনলাইন ব্যাংকিংয়ের আওতায় আনতে অর্থ মন্ত্রণালয় ও বিশ্বব্যাংকের নির্দেশনার আলোকে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১৬ সাল পর্যন্ত সময় দেয়। বিগত ২০১২-১৩ অর্থবছর থেকে রাকাব অনলাইন ব্যাংকিং চালুর উদ্যোগ নেয়। বর্তমানে রাকাবের শাখা ৩৮৩টি। তার মধ্যে ৩৩৫টির বেশি শাখা পুরোপুরি অনলাইনে আনা হয়েছে। আর ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ কে এম সাজেদুর রহমান খান সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদটি এখনো শূন্য রয়েছে।
সূত্র জানায়, সফটওয়্যার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লিডস কর্পোরেশন লিমিটেড গত বছর থেকে রাকাবের সিবিএস স্থাপনের কাজ করছে। তার আগে গত ২ জানুয়ারি ১৫ কোটি টাকায় লিডস কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি করে রাকাব। তবে অন্য দরদাতাদের প্রতিষ্ঠানটিকে কাজ দেয়া নিয়েও অভিযোগ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আইটি কোম্পানি এনসিআর কর্পোরেশন ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। পরের বছর এনসিআর কর্পোরেশনের বাংলাদেশী সব কর্মী, সম্পদ, দায় ও গ্রাহক নিয়ে বাংলাদেশে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লিডস কর্পোরেশন গঠিত হয়।
রাজধানীর বাংলামোটরের রূপায়ন ট্রেড সেন্টারে প্রতিষ্ঠানটির কার্যালয়। এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম জানান, রাকাবের কাছে খোয়া যাওয়া হিসাবগুলোর তথ্য ব্যাকআপ আছে কিনা তা খোঁজ নিতে হবে। ১০ টাকার হিসাব হলেও অনেক হিসাবে এর চেয়ে বেশি টাকা থাকতে পারে। কারণ গ্রাহকরা চাইলে যাতে তা ফেরত দেয়া যায়।